সুকুমার সরকার, ঢাকা: শনিবার ছিল ভারতে ইলিশ রপ্তানির বাংলাদেশ সরকার নির্ধারিত শেষ দিন। রাতে ৪১ টন পদ্মার ইলিশ রপ্তানির মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে চলতি বছরের মতো ইলিশ রপ্তানি। স্থলসীমান্ত বন্দর বেনাপোল কাস্টমস অফিস সূত্রে জানা গিয়েছে, এবছর ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে ১২ অক্টোবর পর্যন্ত ১৬ দিনে ভারতে গেল মোট ৫৩৩ টন ইলিশ মাছ। অথচ চলতি মরশুমে ভারতে রপ্তানি হওয়ার কথা ছিল ২ হাজার ৪২০ টন ইলিশ। বাজারে মাছের স্বল্পতা ও সরবরাহ কম থাকার কারণে চলতি বছরে ইলিশ রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। ইলিশ রপ্তানি করে সরকারের ঘরে এসেছে ৫৩ লক্ষ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার। ভারত সরকারের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে শারদীয় দুর্গাপুজোর ছুটির মধ্যেও বিশেষ ব্যবস্থায় বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতে যায় কয়েকটি ইলিশের চালান।
বাংলার ব্যবসায়ীদের অনুরোধে এ বছর ৫০ জন রপ্তানিকারককে ভারতে মাছ রপ্তানির অনুমতি দেয় সরকার। অনুমতিপ্রাপ্ত মাত্র ২০ জন রপ্তানিকারক ভারতে ইলিশ রপ্তানি করতে পেরেছেন। ৩০ জন রপ্তানিকারক ভারতে আদৌ কোনও মাছই রপ্তানি করতে পারেননি। বেনাপোল মৎস্য অফিসের আধিকারিক মাহবুবুর রহমান জানান, অনুমতি প্রদানের দ্বিতীয় দিন থেকে শুরু হয় ভারতে ইলিশ রপ্তানি। প্রথমদিন ১০ জন রপ্তানিকারকের প্রতিষ্ঠান থেকে ৫৪ টন ইলিশ রপ্তানির মধ্য দিয়ে শুরু হয় মাছ রপ্তানি কাযর্ক্রম। চলতি বছরে প্রতি কেজি ইলিশের রপ্তানি মূল্য নির্ধারণ করা হয় ১০ মার্কিন ডলার বা ১১৮০ টাকা।
ইলিশ সংরক্ষণের সময় ঘনিয়ে আসায় শনিবার মাঝরাত অবধি ইলিশের মেলা বসেছিল পদ্মাপাড়ের জেলা মাদারীপুরে। সেখানে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে প্রায় দুই কোটি টাকার ইলিশ বেচাকেনা হয়েছে। জেলা শহরের পুরানবাজার মাছের আড়ৎ, মস্তফাপুর মৎস্য ভাণ্ডার আর রাজৈর উপজেলার বেপারীপাড়া ও টেকেরহাট বন্দরে ইলিশ বেচার মহাউৎসব হয় শনিবার বিকাল থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত। এদিকে বরগুনার মাছ বাজারে মাইকিং করে বিক্রি করা হয় রুপোলি শস্য। প্রতি কেজিতে ২০০ থেকে ৪০০ টাকা দাম কমিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে এ ইলিশ। দাম কম শুনে বরগুনার মাছ বাজারে ভিড় করেন ক্রেতারা। শনিবার রাতে বরগুনা পৌরসভার মাছ বাজারে মাইকিং করে এই মাছ বিক্রি করা হয়। প্রতি কেজি ছোট সাইজের ইলিশের দাম হাঁকা হয় ৫০০ টাকা, যা এর আগে বিক্রি হয়েছে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায়। আর ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৪০০ টাকায়, যা আগে বিক্রি করা হয়েছে ১৬০০ থেকে ১৭০০ টাকায়।