সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দ্বেষের আগুনে জ্বলতে থাকা বাংলাদেশকে ফের আক্রমণ সাহিত্যিক তসলিমা নাসরিনের। ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে স্বদেশের ভয়ংকর রূপ দেখে জ্বলে উঠলেন প্রতিবাদী লেখিকার। তাঁর আক্রমণ, 'এক জিহাদির মৃত্যুতে লক্ষ জিহাদি সারা বাংলাদেশ জুড়ে তাণ্ডব করেছে।' একইসঙ্গে তাঁর তোপ, 'জিহাদিস্তানের প্রকৃত চেহারা তো এমনই হয়।'
শুক্রবার সোশাল মিডিয়ায় বাংলাদেশের ভয়াবহতার একটি ভিডিও শেয়ার করেছেন তসলিমা। যেখানে দেখা যাচ্ছে, এক হিন্দু যুবক দীপুচন্দ্র দাসকে পিটিয়ে হত্যার পর তাঁর দেহ গাছে ঝুলিয়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে একদল যুবক। চলছে নারকীয় উল্লাস। ভয়ংকর এই ঘটনা তুলে ধরার সঙ্গে পাশাপাশি সোশাল মিডিয়ায় তিনি লেখেন, 'এক জিহাদির মৃত্যুতে লক্ষ জিহাদি সারা বাংলাদেশ জুড়ে তাণ্ডব করেছে। যা কিছু পেয়েছে ভেঙে টুকরো করেছে। সবকিছু জ্বলিয়ে পুড়িয়ে ছাই করেছে। ভালুকার দরিদ্র যুবক দীপু চন্দ্র দাসকে পিটিয়ে মেরে গাছে ঝুলিয়ে আগুনে পুড়িয়েছে জিহাদিরা। না, কারও দুঃখ হয়নি, কারও হাত কাঁপেনি, কারও মন কাঁদেনি, কারো বিবেক জাগেনি। নারায়ে তকবীর আল্লাহু আকবর বলে উল্লাসে চিৎকার করছে তারা। জিহাদিস্তানের প্রকৃত চেহারা তো এমনই হয়।'
বৃহস্পতিবার রাত পৌনে দশটা নাগাদ সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির। ঢাকা ৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র্য প্রার্থী ছিলেন তিনি। বিজয়নগরের বক্স কালভার্ট এলাকায় তিনি গুলিবিদ্ধ হন। সেই সময় নমাজ সেরে রিকশায় বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে সেখান থেকে পাঠানো হয় সিঙ্গাপুরে। পুলিশ সূত্রে খবর, মোটর সাইকেলে এসে দুষ্কৃতীরা তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছে। তবে কে বা কারা হামলা করল, তা এখনও অজ্ঞাত।
বুধবার রাতেই ইউনুসের প্রেস উইং জানিয়েছিল, হাদির শারীরিক অবস্থা রীতিমতো উদ্বেগজনক। সেই ঘোষণার পর থেকেই বাড়ছিল আশঙ্কা। অবশেষে বৃহস্পতিবার মেলে দুঃসংবাদ। তারপরই উত্তপ্ত হয় বাংলাদেশ। পুড়িয়ে দেওয়া হয় একের পর এক সংবাদমাধ্যমের অফিস। মুজিবের ধানমাণ্ডির বাড়ি। গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করে জ্বালিয়ে দেওয়া হয় এক হিন্দু যুবককে। তারপর সেই দেহ গাছে ঝুলিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। সেখানে দাঁড়িয়ে উল্লাস করতে দেখা যায় একদল যুবককে। ভয়াবহ সেই দৃশ্য দেখেই এবার তসলিমার তোপ, 'এটাই প্রকৃত জেহাদিস্তান।'
