সুকুমার রায়, ঢাকা: বাংলাদেশে নিহত দ্বীপু দাসের বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননারও কোনও প্রমাণ মেলেনি। তিনি উসকানিমূলক কোনও মন্তব্যও করেননি। ময়মনসিংহে যুবককে পিটিয়ে খুন এবং পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় এমনটাই জানাল বাংলাদেশের র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
ময়মনসিংহের মোকামিয়াকান্দা গ্রামের বাসিন্দা দীপু গত দু’বছর ধরে ভালুকার একটি কারখানায় কর্মরত ছিলেন। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ কারখানায় হঠাৎ একদল বিক্ষোভকারী চড়াও হন। চলে ভাঙচুর। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, টেনে হিঁচড়ে কারখানার বাইরে বের করে আনা হয় দীপুকে। তারপর গণপিটুনি দেওয়া হয় তাঁকে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় দীপুর। এরপর তাঁর দেহ ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে নিয়ে যায় বিক্ষুব্ধ জনতা। গাছে বেঁধে ধরিয়ে দেওয়া হয় আগুন। সঙ্গে চলে স্লোগান। সূত্রের দাবি, ধর্ম নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যের জেরেই খুন করা হয়েছে দীপুকে। কিন্তু সেই দাবি খারিজ করল খোদ র্যাব।
সম্প্রতি একটি সংবাদিক বৈঠকে ময়মনসিংহ র্যাব-১৪ কোম্পানির কমান্ডার মহম্মদ সামসুজ্জামান বলেন, "নিহত ব্যক্তিকে ধর্ম নিয়ে আপত্তিকর কোনও করতে কেউ শোনোননি।তিনি সমাজমাধ্যমেও কিছু লেখেননি। এদিন রাতে একদল বিক্ষোভকারী কারখানায় বাইরে চড়াও হয়। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে কারখানার অন্যান্য শ্রমিকরাই দীপুকে উন্মত্ত জনতার তুলে দেন।" তিনি আরও বলেন, "কেউ কেউ অভিযোগ করছেন, যুবককে কারখানার ভিতরেই কয়েকজন মারধর করছিলেন। বাইরে পরিস্থিতি যখন উত্তপ্ত হয়, তখন তাঁরা দীপুকে উন্মত্ত জনতার হাতে তুলে দেন।"
নিহতের এক ভাই কার্তিক চন্দ্র দাস বলেন, "এলাকার মানুষ জানে আমার ভাই কেমন। মিথ্যা অভিযোগে তাঁকে খুন করা হয়েছে। যে কারখানায় ঘটনাটি ঘটেছে সেখানকার কেউ এবিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি।" নিহতের বড় বোন চম্পা দাস এই ঘটনাটিকে পরিকল্পিত বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, “আমার ভাই শিক্ষিত মানুষ। ধর্ম নিয়ে তাঁর যথেষ্ট জ্ঞান আছে। সে এমন কাজ করতেই পারে না। আমি শুনেছি, কারখানায় উৎপাদন বাড়ানো নিয়ে শ্রমিক ও মালিকদের সঙ্গে তাঁর বিরোধ ছিল। এ কারণেই তাঁকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে।”
