সুকুমার সরকার, ঢাকা: সোমালিয়ার (Somalia) জলদস্যুদের কবল থেকে প্রায় একমাস পর অবশেষে মুক্তি পেলেন ২৩ বাংলাদেশি (Bangladeshi) নাবিক। জানা গিয়েছে, শনিবার বিকেল ৪টে নাগাদ মুক্তিপণের অর্থ-সহ ডলার ভর্তি তিনটি ব্যাগ জলদস্যুদের হাতে পৌঁছে দেওয়া হয়। সেই অর্থ পেয়েই নাবিক-সহ বাংলাদেশি জাহাজটি ছেড়ে দেয় তারা। মুক্তির পর দুবাই থেকে ২৩ জন নাবিকের বিমানে দেশে ফেরার কথা। জাহাজটি আরব আমিরশাহীর দুবাই (Dubai) পৌঁছনোর পর সেখান থেকেই বিমানে উঠবেন তাঁরা। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, সোমালিয়ার উপকূল থেকে মুক্ত হয়ে জাহাজটি ইতিমধ্যে রওনা হয়েছে দুবাইয়ের দিকে। তা নিশ্চিত করেছেন পণবন্দি জাহাজটির মালিকপক্ষ কবির গ্রুপের মুখপাত্র মিজানুল ইসলাম। তিনি জানান, ইদের আগেই নাবিকদের ফিরিয়ে আনার কথা ছিল। কিন্তু কিছু জটিলতায় তা করা যায়নি। অতীতে জাহান মণির অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে দ্রুত সময়ে ২৩ নাবিককে মুক্ত করা সম্ভব হয়েছে।
মিজানুল ইসলাম আরও জানান, মুক্ত হওয়া ২৩ নাবিককে বিমানে চট্টগ্রামে নিয়ে যাওয়া হবে। চট্টগ্রামে পৌঁছনোর পর তাঁরা ফিরবেন স্বজনদের কাছে। আর উদ্ধার হওয়া জাহাজ ‘এমভি আবদুল্লাহ’ ফিরে যাবে দুবাইয়ে। সেখানে ওই জাহাজে যোগ দেবেন নতুন নাবিকরা (Sailors)। এর আগে ডলারভর্তি ৩টি ব্যাগ পাওয়ার পর শনিবার বিকেল ৪টে নাগাদ ‘এমভি আবদুল্লাহ’ ত্যাগ করে সোমালিয়ার জলদস্যুরা। তবে মুক্তিপণ হিসেবে জলদস্যুদের ঠিক কত ডলার দেওয়া হয়েছে, তা জানায়নি জাহাজের মালিকপক্ষ।
[আরও পড়ুন: ইরানের ড্রোন রুখে দিচ্ছে ইজরায়েলের ‘লৌহবর্ম’, কী এই ‘আয়রন ডোম’?]
উল্লেখ্য, গত ১২ মার্চ ২৩ নাবিক-সহ বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহকে পণবন্দি করে সোমালিয়ার জলদস্যুরা (Pirates)। সোমালিয়ার স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবর, মুক্তিপণের পরিমাণ ৫ মিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ৫৫ কোটি টাকা। সেখানকার একটি সংবাদ পত্র ডলারের এই অঙ্কের উল্লেখ করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তবে মালিকপক্ষের আরেকটি সূত্র অনুযায়ী, মুক্তিপণ (Ransom) বাবদ দেওয়া টাকার অঙ্ক আরও কম বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন।
[আরও পড়ুন: ইরানে হামলা করলে সমর্থন নয়, পাশে থাকলেও ইজরায়েলকে শর্ত দিল আমেরিকা]
জলদস্যুদের সঙ্গে বোঝাপড়া চূড়ান্ত হওয়ার কথা স্বীকার করে সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছে কেএসআরএম গ্রুপের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার জাহান রাহাত। ফেসবুক পোস্টে শাহরিয়ার জাহান রাহাত উল্লেখ করেন, ‘‘সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে জিম্মি থাকা ২৩ নাবিক-সহ এমভি আবদুল্লাহ জাহাজ মুক্ত হয়েছে। নাবিকরা সবাই সুস্থ আছেন। শিগগির তাঁরা দেশে ফিরবেন।'' মিজানুল ইসলাম আরও জানান, জাহাজটি মুক্ত করা হয়েছে। তা দুবাইয়ের দিকে যাচ্ছে। সেখানে পণ্য খালাস করবে আর নাবিকরা দেশে ফিরে আসবে শিগগির। ১৪ বছর আগে একই মালিকের আরেকটি জাহাজ এমভি জাহান মণিকেও একইভাবে মুক্ত করে কেএসআরএম গ্রুপ।