সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শেখ হাসিনার আমলে বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ তুলেছিল বিরোধী শিবির। সেই অভিযোগের উপর ভিত্তি করে এবার আওয়ামি লিগের জয়ের রহস্য ফাঁস করতে মাঠে নামছে ইউনুসের গঠিত নির্বাচন কমিশন। ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এএমএম নাসিরউদ্দিন।
সম্প্রতি নির্বাচন কমিশনের এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া নেওয়া হয়েছে। যেখানে সব কমিশনারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, বিগত নির্বাচনে সমস্ত অনিয়ম ও ত্রুটিগুলি চিহ্নিত করে ও নির্বাচনী কারচুপির তদন্ত করে সেই রিপোর্ট পাঠাতে হবে মুখ্য নির্বাচন কমিশনে। উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে বিরোধী দলগুলি নির্বাচন বয়কট করায় একতরফাভাবে ভোত হয় বাংলাদেশে। এবং বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আওয়ামি লিগের ১৫৩ জন সাংসদ জয়ী হন। ২০১৮ সালে বিরোধীরা অংশ নিলেও অভিযোগ ওঠে রাতেই ছাপ্পা ভোটের মাধ্যমে জেতানো হয় শাসকদলকে। ২০২৪ সালের নির্বাচনে বিরোধী দলগুলিকে বাইরে রেখে ডামি প্রার্থীদের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দেখানো হয় বলে অভিযোগ। বিরোধীদের দাবি এভাবেই কারচুপি করে বার বার ক্ষমতায় এসেছে আওয়ামি লিগ। অতীতের সেই নির্বাচন নিয়েই এবার তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
শেখ হাসিনার বিদায়ের পর বর্তমানে উপদেষ্টা সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব সামলাচ্ছেন মহম্মদ ইউনুস। এদিকে নতুন করে দেশে নির্বাচন করানোর দাবি তুলেছে বিরোধী শিবির। নির্বাচনে গড়িমশির অভিযোগ উঠেছে ইউনুসের বিরুদ্ধে। প্রবল চাপের মুখে গত বছর প্রধান উপদেষ্টা জানিয়ে দিয়েছেন, ২০২৫ সালের শেষে বা ২০২৬ সালের শুরুর দিকে হতে পারে জাতীয় নির্বাচন। সেই লক্ষ্যে গঠিত হয়েছে নয়া কমিশনও। এবার সেই কমিশনই অতীতের নির্বাচনের তদন্তে নামল। যদিও এই ঘটনা প্রসঙ্গে রাজনৈতিক মহলের দাবি, আসলে বাংলাদেশের মাটিতে হাসিনা বিরোধী মনোভাব আরও প্রবল করে তুলতেই এই পদক্ষেপ। তাছাড়া তদন্তে আওয়ামি লিগকে দোষী সাব্যস্ত করে আসন্ন নির্বাচনে তাদের অংশগ্রহণের উপর যাতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা যায় তার জন্যই এই পদক্ষেপ।
যদিও এই প্রসঙ্গে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এএমএম নাসিরউদ্দিন জানান, দেশবাসীকে একটি সুষ্ঠু, সুন্দর ও নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেওয়াই আমাদের লক্ষ্য। তার জন্য আমরা যা যা করার তা করব। পাশাপাশি কমিশনের দাবি, অতীতের নির্বাচনী ব্যবস্থা কেন ক্ষতিগ্রস্ত হল। কাদের অবহেলা, গাফিলতি ও ষড়যন্ত্রে এই ঘটনা ঘটেছে তা খতিয়ে দেখব আমরা। যারা এই ঘটনায় জড়িত তাদের কাউকে ছাড়া হবে না।