সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শেখ হাসিনাহীন বাংলাদেশে প্রভাব বিস্তার করতে মরিয়া পাকিস্তান। মহম্মদ ইউনুসের অন্তর্বর্তী সরকারও ঘনিষ্ঠতা বাড়াচ্ছে ইসলামাবাদের সঙ্গে। চট্টগ্রাম বন্দরে ভিড়েছে পাক জাহাজ। বাংলাদেশের নানা প্রান্তে মার খাচ্ছেন হিন্দুরা। কিন্তু পাক নাগরিকদের জন্য দরজা খুলে দিয়েছে ইউনুস সরকার। এই পরিস্থিতিতে বন্ধুত্ব মজবুত করতে ঢাকা সফরে আসছেন পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী ইশহাক দার। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশকে 'হারিয়ে যাওয়া ভাই' হিসেবে উল্লেখ করেছেন তিনি। যা নিয়ে সিঁদুরে মেঘ দেখছে ভারত।
জানা গিয়েছে, আগামী ফেব্রুয়ারি মাসেই ঢাকায় পা রাখবেন ইশহাক দার। এই সফর নিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার ইসলামাবাদে এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, "বাংলাদেশ আমাদের হারিয়ে যাওয়া ভাই। ঢাকাকে সব ধরনের সহযোগিতা করতে পাকিস্তান প্রস্তুত। আমাদের বিদেশ দপ্তর অর্থনৈতিক কূটনীতি অনুসরণ করছে। এ অঞ্চলের স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নে আমরা পাশে থাকতে চাই।" ইউনুস সরকারের আমন্ত্রণে তাঁর আসন্ন এই সফরকে যুগান্তকারী বলে উল্লেখ করেছে পাক বিদেশমন্ত্রক। প্রসঙ্গত, গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে রাষ্ট্রসংঘে প্রধান উপদেষ্টা ইউনুস বৈঠক করেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। সেই বৈঠকের পরও ঘোষণা করা হয় যে দুই দেশই বিভিন্ন স্তরে পারস্পরিক সহযোগিতা জোরদার করেছে।
উল্লেখ্য, গত ডিসেম্বর মাসেই পাকিস্তানের করাচি বন্দর থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে আসে পাক পণ্যবাহী দ্বিতীয় জাহাজ। কিন্তু সেই জাহাজে নাকি বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক! এক্স হ্যান্ডেলে এমনই দাবি করে আওয়ামি লিগ বলে, 'পাক জাহাজে ‘সিসমিক ইমালসন’ নামের বিস্ফোরক রয়েছে। যা যে কোনও রকম নির্মাণ ধ্বংস করতে সক্ষম। এবং এই বিস্ফোরকের মাধ্যমে তৈরি বোমায় হতাহতের সংখ্যাও ভয়াবহ আকার নিতে পারে। চট্টগ্রাম বিমানবন্দরের এক আধিকারিক ওই সব কন্টেনারের ছবি প্রকাশ্যে আনেন। এই কন্টেনারে লাল রঙে স্পষ্ট লেখা রয়েছে বিস্ফোরক শব্দ। বাংলাদেশের নৌবাহিনী কয়েক ঘণ্টার জন্য এই কন্টেনারগুলিকে আটক করলেও পরে অজ্ঞাত কারণে তা ছেড়ে দেওয়া হয়।’
এছাড়া পাকিস্তানিদের সুবিধার্তে নির্দেশিকাও জারি করেছে ইউনুস সরকার। বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রক বিবৃতি দিয়ে সাফ বলেছে, পাকিস্তানিদের জন্য যেন বাংলাদেশের ভিসা পাওয়া সহজতর করা হয়। এই নির্দেশিকা সমস্ত বাংলাদেশি দূতাবাস এবং ডেপুটি হাই কমিশনগুলোর জন্য জারি করা হয়। পাশাপাশি বাংলাদেশের ভিসা পাকিস্তানি বংশোদ্ভূতদের জন্যও ঝঞ্ঝাটমুক্ত করতে বলা হয়েছে। যাতে যেকোনও জায়গা থেকেই তাঁরা সহজে ঢাকায় যাতায়াত করতে পারেন। বিশ্লেষকদের মতে, এভাবেই বাংলাদেশে অবাধ বিচরণ বাড়বে পাকিস্তানিদের। হাসিনা সরে যাওয়ার পর মাথাচারা দিয়েছে পাকপন্থী জামাত। সন্ত্রাসী কার্যকলাপ বাড়িয়ে তুলেছে আনসারুল্লা বাংলা টিম (এবিটি)। যাদের যোগাযোগ রয়েছে বিভিন্ন পাক জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে। আর এবিটিই এখন ভারতকে রক্তাক্ত করার ছক কষছে। ফলে বাংলাদেশে প্রভাব বিস্তার করে ভারতে সন্ত্রাস ছড়াতে পারে পাকিস্তান।