সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাষ্ট্রদোহ মামলায় এখনও জেলবন্দি ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভু। আজ মঙ্গলবারও ফের একবার তাঁর জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে গেল বাংলাদেশ হাই কোর্টে। কিন্তু কেন এই মামলায় জামিন পাবেন না এই হিন্দু সন্ন্যাসী? এই উত্তর জানতে মহম্মদ ইউনুসের অন্তর্বর্তী সরকারের কাছেও হলফনামা তলব করেছে আদালত। আগামী দুসপ্তাহের মধ্যে জবাব দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জানা গিয়েছে, আজ হাই কোর্টে চিন্ময় প্রভুর জামিনের শুনানি ছিল বিচারপতি মহম্মদ আতোয়ার রহমান ও বিচারপতি মহম্মদ আলি রেজার বেঞ্চে। কিন্তু চিন্ময়ের মুক্তি পাওয়ার আশা খুবই ক্ষীণ ছিল। শুনানি শেষে ফের একবার খারিজ হয়ে যায় জামিনের আবেদন। তবে পাশাপাশি এদিন আদালত জানতে চায়, এই মামলায় আবেদনকারীকে কেন জামিন দেওয়া হবে না? এর উত্তর দিতে সরকারকে দুসপ্তাহের সময়ও বেঁধে দেওয়া হয়। আজ আদালতে চিন্ময় পক্ষের শুনানিতে তাঁর হয়ে সওয়াল করেন, আইনজীবী অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্য ও আইনজীবী প্রবীর হালদার। অন্যদিকে, মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের তরফে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মহম্মদ আরশাদুর রউফ ও অনীক আর হক। দুপক্ষের সওয়াল জবাবের পরই কোর্ট রুল জারি করে।
বাংলাদেশে প্রায় দুমাস ধরে বন্দি সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী। তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়ের করেছে মহম্মদ ইউনুসের অন্তর্বর্তী সরকার। দোষী সাব্যস্ত হলে সাজা যাবজ্জীবন জেল। তবে হাসিনা পরবর্তী বাংলাদেশে মৌলবাদীদের হাতে নিপীড়িত হিন্দুদের হয়ে আওয়াজ তোলার জন্যই তাঁকে নিশানা করা হচ্ছে, একথা স্পষ্ট।
উল্লেখ্য, ২৫ নভেম্বর বিকালে জাতীয় পতাকা অবমাননার দায়ে ইসকনের সন্ন্যাসীকে ঢাকার বিমানবন্দর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। ২৬ তারিখ চট্টগ্রামের আদালতে তোলা হয় তাঁকে। আনা হয় রাষ্ট্রদোহ মামলা। শুনানি শেষে জামিন খারিজ হয়ে যায় চিন্ময় প্রভুর। এরপর হামলার মুখে পড়ে আইসিইউ-তে ভর্তি হতে হয় তাঁর আর এক আইনজীবীকে। এই গ্রেপ্তারি নিয়ে বাংলাদেশে প্রতিবাদের ঝড় তোলেন হিন্দুরা। কড়া বার্তা দেয় ভারতও। কিন্তু তাতে কোনও লাভ হয়নি। দুমাস হয়ে গেলেও গারদের পিছনেই রয়েছেন চিন্ময় প্রভু। গত ৩ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম আদালতে তাঁর শুনানি ছিল। কিন্তু ‘প্রাণভয়ে’ ৫১ জন আইনজীবী দলের কেউই চিন্ময়ের হয়ে আদালতে সওয়াল করতে আসেননি। ফলে পিছিয়ে যায় জামিন মামলার শুনানি। পরবর্তী শুনানির দিন ঠিক হয় ২ জানুয়ারি।
এর মাঝেই হিন্দু সন্ন্যাসীকে জেলবন্দি করে রাখতে নানা ফন্দি আঁটে মহম্মদ ইউনুসের অন্তর্বর্তী সরকার! কয়েকদিন আগেই বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট সংবাদমাধ্যমে দাবি করে, চিন্ময় প্রভুর মুক্তি আটকাতে ৭০ জন হিন্দু সন্ন্যাসীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। যাতে কেউ তাঁর হয়ে আদালতে দাঁড়াতে না পারেন। কিন্তু ভয় না পেয়ে ২ জানুয়ারি চিন্ময়ের হয়ে সওয়াল করতে আসেন আইনজীবীরা। কিন্তু সেদিনও জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে যায়। ফলে আর কত দিন এইভাবে জেলেই কাটাতে হবে চিন্ময়কে তার উত্তর আজকের শুনানিতেও মিলল না।
