সুকুমার সরকার, ঢাকা: পড়ুয়াদের আন্দোলন জারি ছিলই। এবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়-সহ বাংলাদেশের আরও কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদত্যাগ করেছেন। তবে কেউ কেউ নিজে থেকে আবার কেউ কেউ ছাত্রদের দাবির মুখেই পদত্যাগ করছেন বলে খবর। এদিকে, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক কাজী শহীদুল্লাহও তার পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। আজ, রবিবার, তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে পদত্যাগপত্র পাঠান। এছাড়া দেশের ৬ ক্যাম্পাসে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে ছাত্র রাজনীতি।
শনিবার, ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাকসুদ কামাল পদত্যাগ করেন। তিনি জানিয়েছেন, "আমি ব্যক্তিগত কারণে আমার পদ থেকে পদত্যাগ করছি।" ড. মাকসুদ ছাড়াও সাতটি হলের প্রভোস্ট পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। গতকাল দুপুরে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে তারা পদত্যাগ করেন। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর শিক্ষার্থীরা সময়সীমা বেঁধে দেওয়ায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যাল, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পর রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক ড. হাসিবুর রশীদও পদত্যাগ করেন। শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলন সময় গত ১৬ জুলাই পুলিশের গুলিতে নিহত হন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আবু সাইদ। এর পর থেকে আন্দোলনের দাবানল ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র। গত কয়েকদিন ধরেই বাংলাদেশের বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা পদত্যাগ করছেন। রদবদল হয়েছে সেনাবাহিনীতেও। মূলত 'হাসিনাপন্থী' অফিসারদের পদ থেকে অপসারণ কিংবা বদলি করা হয়েছে।
[আরও পড়ুন: শপথ নিলেন সুপ্রিম কোর্টের নতুন প্রধান বিচারপতি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে আরও ২ উপদেষ্টা]
এদিকে, প্রশাসনিক বিভিন্ন পদ থেকেও শিক্ষকরা পদত্যাগ করেছেন। এছাড়া দেশের ছয় ক্যাম্পাসে সব ধরনের ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ হয়েছে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক), স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় , বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় এবং নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যাপক ড. শফিকুল আলম চৌধুরীর সই করা এক আদেশে বলা হয়েছে, কলেজ ক্যাম্পাসে সব ধরনের ছাত্র রাজনীতি স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ থাকবে। কোনও শিক্ষার্থীকে ক্যাম্পাস ও হোস্টেলে প্রকাশ্যে বা গোপনে কর্মকাণ্ডে প্রচার-প্রচারণায় জড়িত থাকতে দেখা গেলে তার বিরুদ্ধে ক্যাম্পাস ও হোস্টেল থেকে তাৎক্ষণিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর আগে দলীয় রাজনীতি বন্ধ-সহ ১২ দফা দাবি জানিয়েছিলেন রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।