সুকুমার সরকার, ঢাকা: এবার ভারত সীমান্তে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-এর হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। তিনি অবৈধভাবে ভারতে যাওয়ার সময় গ্রেপ্তার হয়েছেন বলে জানিয়েছে বিজিবি। গত ৫ অগাস্ট আওয়ামি লিগ সরকারের পতনের পর ঢাকা ও নোয়াখালীতে দুটি মামলা হয় শামসুদ্দিন চৌধুরীর বিরুদ্ধে। দুই মামলাতেই বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করার অভিযোগ আনা হয়েছে।
শুক্রবার রাতে সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার দনা সীমান্ত এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় শামসুদ্দিন চৌধুরীকে। ইতিমধ্যে প্রাক্তন এই বিচারপতির আটক হওয়ার সময়ের কয়েকটি ভিডিও সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়েছে। প্রকাশ্যে এসেছে শামসুদ্দিন কে বিজিবির জিজ্ঞাসাবাদের ভিডিও। জানা গিয়েছে, তিনি সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে ঢুকেছিলেন। বিজিবির কাছে শামসুদ্দিন দাবি করেন লুটপাটের শিকার হয়েছেন বলেও দাবি করেন। আটক হওয়ার সময় তাঁর কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা পায় বিজিবি। গ্রেপ্তার হওয়ার সময় তাঁর পরনে ছিল প্যান্ট ও হাফ শার্ট। মুখে কয়েক দিনের না কাটা দাড়ি।
[আরও পড়ুন: খুনের মামলার বিচারের জন্য পাক সিরিজের মাঝপথেই দেশে ফেরাতে হবে শাকিবকে, দাবি বাংলাদেশে]
এনিয়ে জকিগঞ্জ বিজিবি ব্যাটালিয়ন জানায়, শুক্রবার রাত ১২টা পর্যন্ত শামসুদ্দিনকে সীমান্তবর্তী বিজিবি ক্যাম্পে রাখা হয়। তিনি আপিল বিভাগের বিচারপতি ছিলেন। ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে তিনি অবসরে নেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে নিহতের ঘটনায় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার মন্ত্রিসভার সদস্য এবং আওয়ামি লিগের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া একাধিক মামলায় শামসুদ্দিন চৌধুরীরও নাম রয়েছে।
গত ৫ আগস্ট ব্যাপক গণ আন্দোলনের জেরে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন হাসিনা। এর পর থেকে তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতি ছাড়াও একের পর এক মামলা দায়ের হচ্ছে। সাংবাদিকের মৃত্যুর ঘটনাতেও খুনের মামলায় নাম জড়িয়েছে হাসিনার। এছাড়াও প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী হাসান মাহমুদ, প্রাক্তন সমাজকল্যাণমন্ত্রী দীপু মনি-সহ বহু হাই প্রোফাইল মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে মামলা করা হচ্ছে। গ্রেপ্তার হয়েছেন বেশিরভাগ নেতা কর্মীই। আন্দোলনের সময় সকলের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করছে অন্তর্বর্তী সরকার। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিএনপি-জামাতের মতো দলগুলো আড়ালে থেকে হাসিনাপন্থীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরে উসকানি দিচ্ছে। এভাবেই কার্যত বদলার রাজনীতি চলছে বাংলাদেশে।