সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাতারাতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্তম্ভ থেকে মুছে ফেলা হল শেখ হাসিনার গ্রাফিতি। শনিবার গভীর রাতে এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরই বিক্ষোভ, সমালোচনা শুরু হতেই দায়সারাভাবে ভুল স্বীকার করল কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ ছিল, প্রোক্টরের উসকানিতেই এই ঘৃণ্য কাজ হয়েছে। তাই তাঁর পদত্যাগের দাবিও উঠেছিল। এসবের চাপে রবিবার বিকেলে কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হল, এটা প্রোক্টরিয়াল টিমের অনিচ্ছাকৃত ভুল। এর জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখপ্রকাশ করা হচ্ছে।
ঘটনা ঠিক কী? জানা গিয়েছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি সংলগ্ন মেট্রো রেলের পিলারে আঁকা শেখ হাসিনার গ্রাফিতির অর্ধেকটাই মুছে ফেলা হয়েছিল। সেখানে অন্য কিছু আঁকা হয়। তাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোক্টরের উসকানি রয়েছে, এই খবর ছড়িয়ে পড়তে রাত আড়াইটা নাগাদ টিএসসির সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন ছাত্রছাত্রীরা। ভোর সাড়ে চারটা পর্যন্ত বিক্ষোভ চলে। পরে ‘ঘৃণাস্তম্ভে’ শেখ হাসিনার আরেকটি গ্রাফিতি আঁকা হয়। এনিয়ে তুমুল ঝামেলা হয়।
রবিবার সকাল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পড়ুয়ারা জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। দাবি তোলা হয় প্রোক্টরের পদত্যাগের। চাপে পড়ে কর্তৃপক্ষ পরে সাংবাদিক বৈঠকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জানায়, "আমরা অতি দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, ২৮ ডিসেম্বর গভীর রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পিছনে মেট্রোরেলের দুটি পিলারে থাকা শেখ মুজিব এবং শেখ হাসিনার ঘৃণাসূচক গ্রাফিতি মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়। জুলাই আন্দোলনে এই দুটি গ্রাফিতি বিপ্লব, প্রতিরোধ এবং ফ্যাসিবাদ ধ্বংসের প্রতিনিধিত্ব করে। এই স্মৃতিকে তাজা রাখা এবং পরের প্রজন্ম ছড়িয়ে দেওয়া আমাদের দায়িত্ব। এটি প্রক্টোরিয়াল টিমের অনিচ্ছাকৃত ভুল। আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি। ভবিষ্যতে এ ব্যাপারে আমরা আরও সতর্ক থাকার অঙ্গীকার করছি।"
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আরও দাবি, "প্রক্টোরিয়াল টিমের উপস্থিতিতে গত রাতেই শিক্ষার্থীরা মুছে ফেলা গ্রাফিতি অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে এঁকেছেন। এই স্তম্ভটিকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিক ঘৃণাস্তম্ভ হিসেবে স্বীকৃতি দেবে। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার এই ঘৃণাকে যুগ যুগ ধরে সংরক্ষণের দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গ্রহণ করবে।"