সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে মহম্মদ সাহাবুদ্দিন চুপ্পুকে মনোনীত করেছে শাসকদল আওয়ামি লিগ৷ সাহাবুদ্দিন চুপ্পু জেলা ও দায়রা জজ ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামি লিগ সভাপতি শেখ হাসিনা দলীয় প্রার্থী হিসেবে তাঁর নাম চূড়ান্ত করেছেন। রবিবার বেলা ১১টায় ঢাকায় নির্বাচন কমিশনে গিয়ে রাষ্ট্রপতি পদে তাঁর মনোনয়নপত্র দাখিল করে একথা জানান আওয়ামি লিগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
সাহাবুদ্দিন চুপ্পুর মনোনয়ন নিয়ে ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে আট সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল রবিবার বেলা ১১টার দিকে নির্বাচন কমিশনের কার্যালয়ে প্রবেশ করে। এরআগে রাজধানী ঢাকার আগারগাঁওয়ের নির্বাচন কমিশনের সামনে এসে ওবায়দুল কাদের, তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, চিফ হুইপ লিটন চৌধুরী, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, ফারুক খান, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সেলিম মাহমুদ প্রমুখ অপেক্ষা করতে থাকেন। তার ১০ মিনিট পর মহম্মদ সাহাবুদ্দিন কমিশনে এলে তাঁকে সঙ্গে নিয়ে ওই প্রতিনিধিদল ভেতরে ঢোকে। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোটার সংসদ সদস্যরা। চলতি সংসদে আওয়ামি লিগের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে। ফলে আওয়ামি লিগ যাঁকে প্রার্থী মনোনীত করবে, তিনিই যে পরবর্তী রাষ্ট্রপতি হবেন তা নিশ্চিতভাবে বলা যায়।
[আরও পড়ুন: গ্রুপ ডি-তে বাতিলদের জায়গায় ওয়েটিং লিস্ট থেকে নিয়োগ, সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা প্রকাশ SSC’র]
১৯৪৯ সালে পাবনায় জন্ম তাঁর। সাহাবুদ্দিন চুপ্পু ছাত্রজীবনে পাবনা জেলা ছাত্রলিগের সভাপতি এবং ১৯৭৪ সালে পাবনা জেলা যুবলিগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭১ সালে পাবনা জেলার স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক ছিলেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর জেলেও যেতে হয় তাঁকে। এরপর ১৯৮২ সালে বিসিএস (বিচার) বিভাগে যোগদান। ১৯৯৫ সালে জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব হিসেবে নির্বাচিত হন মহম্মদ সাহাবুদ্দিন চুপ্পু। তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় আইন মন্ত্রণালের নিযুক্ত সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
২০০১ সালের সাধারণ নির্বাচন পরবর্তী সময়ে বিএনপি-জামাত জোটের নেতাকর্মীদের সংঘটিত হত্যা, ধর্ষণ ও লুণ্ঠন এবং মানবতা বিরোধী কর্মকাণ্ডের অনুসন্ধানে গঠিত বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বাংলাদেশ আওয়ামি লিগের সর্বশেষ জাতীয় কাউন্সিলে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ব্যক্তিগত জীবনে এক পুত্র সন্তানের পিতা এবং তাঁর স্ত্রী অধ্যাপিকা ডঃ রেবেকা সুলতানা সরকারের সাবেক যুগ্মসচিব ছিলেন। বিচারকের বিভিন্ন পদে চাকরি শেষে ২৫ বছর পর ২০০৬ সালে জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে অবসর নেন। আগামী ২৩ এপ্রিল রাষ্ট্রপতি মহম্মদ আবদুল হামিদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। তবে সংবিধান অনুযায়ী, পরবর্তী রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়ে শপথ না নেওয়া পর্যন্ত বর্তমান রাষ্ট্রপতি নিজ পদে বহাল থাকবেন।