সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুসের ভারত বিরোধিতার সুর ফের একবার স্পষ্ট হয়ে গেল। ইনকিলাব মঞ্চের নেতা ওসমান হাদির (Osman Hadi) মৃত্যুর পরে ইউনুসের বক্তব্যে স্পষ্ট তার মনোভাব। শনিবার ওসমান হাদির শেষ যাত্রায় শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, এই কট্টরপন্থী নেতা জনগণের হৃদয়ে বেঁচে থাকবেন। পাশাপাশি হাদির আদর্শের পক্ষে দাঁড়িয়ে তা অনুসরণ করার অঙ্গীকার করেছেন ইউনুস।
হাদির শেষযাত্রায় আসা মানুষের উদ্দেশে ইউনুস বলেন, বাংলাদেশজুড়ে বহু মানুষ এবং প্রবাসী বাংলাদেশীরা হাদির বিষয়ে শোনার জন্য অপেক্ষা করছেন। তিনি বলেন, 'প্রিয় ওসমান হাদি, আমরা এখানে বিদায় জানাতে আসিনি। তুমি আমাদের হৃদয়ে বাস করো। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে, তুমি এই দেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে থাকবে।'
কট্টরপন্থী, মৌলবাদী, ভারতবিদ্বেষী, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ছিলেন ওসমান হাদি। তার রাজনীতির ছত্রে ছত্রে ছিল ভারতের প্রতি ঘৃণা এবং বিদ্বেষের বীজ। জুলাই আন্দোলনে উত্থান ওসমান হাদির। পরে আওয়ামি লিগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে আন্দোলনে পরিচিত মুখ হয়ে ওঠেন। হাসিনা ও আওয়ামি বিরোধিতার পাশাপাশি ছাত্র নেতার অন্যতম এজেন্ডা ছিল ভারত বিরোধিতা। উত্তরপূর্ব ভারতের বেশ কিছু অংশ জুড়ে 'গ্রেটার বাংলাদেশে'র ম্যাপ প্রকাশ করে বিতর্ক উসকে দিয়েছিলেন হাদি।
রাজনীতির প্রতি হাদির দৃষ্টিভঙ্গির কথা স্মরণ করে ইউনুস বলেন, 'তিনি দেখিয়েছেন কিভাবে নম্রতার সঙ্গে মানুষের সঙ্গে মিশতে করতে হয়, কষ্ট না দিয়ে মতামত প্রকাশ করতে হয় এবং সদয়ভাবে প্রচার চালাতে হয়।' তিনি আরও বলেন, "আমরা তাঁর শিক্ষা গ্রহণ করব এবং এর বাস্তবায়নের চেষ্টা করব। আমরা আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতিকে এমন একটি স্তরে নিয়ে যেতে চাই যেখানে হাদির উদাহরণ জীবন্ত থাকবে।"
এদিকে, ইউনুস সরকারকে সময় বেঁধে দিয়েছেন, ইনকিলাব মঞ্চের নেতা আবদুল্লা আল জাবের। তার দাবি, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সরকারকে জানাতে হবে হাদির হত্যার জন্য দোষীদের গ্রেপ্তারে সরকার কী ব্যবস্থা নিয়েছে।
১২ ডিসেম্বর দুপুরে ঢাকার রাস্তায় অজ্ঞাত আততায়ীদের গুলিতে গুরুতর জখম হন তিনি। উন্নত চিকিৎসার জন্য সরকারি উদ্যোগে হাদিকে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বৃহস্পতিবার রাতে মৃত্যু হয় তাঁর। হাদির মৃত্যুর পর নতুন করে অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার রাতে দেশের দুই সংবাদমাধ্যম, ভারতীয় দূতাবাস, সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানট, আওয়ামি লিগের অফিসে হামলা হয়। উত্তেজিত জনতা চট্টগ্রামে খুন করে এক সাংবাদিককে। এক সংখ্যালঘু যুবককে হত্যা করা হয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, যারা বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সংগঠন ছায়ানটকে ধ্বংস করে, রবীন্দ্রনাথের ছবিতে আগুন দেয়, তাদের নেতা কি কাজী নজরুল ইসলামের মতো ধর্মনিরেপক্ষ উদার কবির পাশে দাফনের যোগ্য?
