সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জুলাই আন্দোলনের অন্যতম ছাত্রনেতা তথা ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদির (Osman Hadi Death) খুনিরা এখনও অধরা। এই পরিস্থিতিতে ক্রমেই চাপ বাড়ছে সেদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের উপর। এবার প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুসকে চরম বার্তা দিল ইনকিলাব মঞ্চ। তারা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হাদির খুনিদের ধরতে না পারলে অন্তর্বতী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এবং সহকারী উপদেষ্টাকে পদত্যাগ করতে হবে।
শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের পাশের কবরস্থান ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধি-সংলগ্ন এলাকায় সমাধিস্থ করা হয়েছে হাদিকে। তাঁর ‘জানাজা’য় লাখো মানুষের ভিড় ছিল। হাদির শেষকৃত্যের পর শাহবাগ চত্বরে জমায়েত হন বহু মানুষ। সেখান থেকেই ইউনুস সরকারকে বার্তা দেন ইনকিলাব মঞ্চের নেতা আবদুল্লা আল জাবের। বলেন, “হাদির খুনিদের গ্রেপ্তার করতে সরকার কী পদক্ষেপ করেছে, তা জনগণকে জানাতে হবে। পাশাপাশি, তদন্ত কতদূর এগিয়েছে তা-ও জানাতে হবে। যদি সরকার তা করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা তথা লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদাবক্স চৌধুরীকে পদত্যাগ করতে হবে।” জাবেরের এই হুঁশিয়ারির পরই প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি হিংসার আগুনে ফের জ্বলবে বাংলাদেশ?
অন্যদিকে, হাদির শেষযাত্রায় আসা মানুষের উদ্দেশে ইউনুস বলেন, "বাংলাদেশজুড়ে বহু মানুষ এবং প্রবাসী বাংলাদেশীরা হাদির বিষয়ে শোনার জন্য অপেক্ষা করছেন। প্রিয় ওসমান হাদি, আমরা তোমাকে বিদায় জানাতে আসিনি। তুমি আমাদের হৃদয়ে বাস করো। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে, তুমি এই দেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে থাকবে।" রাজনীতির প্রতি হাদির দৃষ্টিভঙ্গির কথা স্মরণ করে ইউনুস বলেন, "হাদি দেখিয়েছেন কীভাবে নম্রতার সঙ্গে মানুষের সঙ্গে মিশতে করতে হয়, কষ্ট না দিয়ে মতামত প্রকাশ করতে হয় এবং সদয়ভাবে প্রচার চালাতে হয়।" তিনি আরও বলেন, “আমরা তাঁর শিক্ষা গ্রহণ করব এবং এর বাস্তবায়নের চেষ্টা করব। আমরা আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতিকে এমন একটি স্তরে নিয়ে যেতে চাই যেখানে হাদির উদাহরণ জীবন্ত থাকবে।” তাৎপর্যপূর্ণভাবে এই ইনকিলাব মঞ্চকে বাংলাদেশে নিষিদ্ধ করেছিলেন খোদ ইউনুসই। কিন্তু এখন তারই পাশে দাঁডাচ্ছেন তিনি।
উল্লেখ্য, গত ১২ ডিসেম্বর দুপুরে ঢাকার রাস্তায় আততায়ীদের গুলিতে গুরুতর জখম হন হাদি। উন্নত চিকিৎসার জন্য সরকারি উদ্যোগে হাদিকে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই বৃহস্পতিবার রাতে তাঁর মৃত্যু হয়। হাদির মৃত্যুর পরই নতুন করে অশান্তি ছড়ায় বাংলাদেশে। বৃহস্পতিবার রাতে দেশের দুই সংবাদমাধ্যম, ভারতীয় দূতাবাস, সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ছায়ানট এবং আওয়ামি লিগের অফিসে হামলা হয়। উত্তেজিত জনতা চট্টগ্রামে খুন করে এক সাংবাদিককে।পাশাপাশি, ময়মনসিংহে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয় এক হিন্দু যুবককেও।
