সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সংখ্যালঘু হিন্দু যুবক দীপুচন্দ্র দাসকে নৃশংস হত্যায় ভারতের বিদেশমন্ত্রকের বিবৃতিতে কাজ হল। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পালটা বিবৃতি দিল মহম্মদ ইউনুসের অন্তর্বর্তী সরকার। যদিও ময়মনসিংহের ঘটনাটিকে একটি 'বিচ্ছিন্ন' ঘটনা বলে দাবি করল ঢাকা। ওই ঘটনাকে সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণ বলে দেখানো উচিত নয় বলেই দাবি তাদের।
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে জ্বলছে গোটা বাংলাদেশ। নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে সংখ্যালঘু হিন্দু যুবক দীপু দাসকে। এরইমাঝে বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমের তরফে গুজব ছড়ানো হয়, দিল্লিতে আক্রান্ত হয়েছে বাংলাদেশের দূতাবাস। গোটা ঘটনা নিয়ে রবিবার বিবৃতি জারি করে বিদেশমন্ত্রক। সেখানে দীপুর হত্যাকারীদের বিচারের দাবির পাশাপাশি নয়াদিল্লি জানায়, বেশ কিছু বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমে ভারত নিয়ে বিভ্রান্তিমূলক প্রচার চালাচ্ছে। বাংলাদেশের সংখ্যালঘু নাগরিকদের উপর আক্রমণ নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত সরকার। রবিবার দুপুরে দিল্লির বিবৃতির কয়েক ঘণ্টার পর পালটা বিবৃতি দিয়েছে ঢাকা।
মহম্মদ ইউনুসের অন্তর্বর্তী সরকারের বিদেশ মন্ত্রকের বক্তব্য, দীপু দাসকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনা একটি ‘বিচ্ছিন্ন হামলা’। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ভারত এই ঘটনাকে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছে। আমরা তাদের এমন প্রচেষ্টাকে প্রত্যাখ্যান করছি। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহভাজনদের বাংলাদেশ সরকার দ্রুত গ্রেপ্তার করেছে। দক্ষিণ এশিয়ার অনেক দেশের তুলনায় বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি ভালো।’
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার রাতে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির। এই ঘটনার পরই ভয়ংকর হিংসা ছড়ায় গোটা বাংলাদেশে। এরই রোষ গিয়ে পড়ে দীপু নামে ওই সংখ্যালঘু হিন্দু যুবকের উপর। ময়মনসিংহের মোকামিয়াকান্দা গ্রামের বাসিন্দা দীপু গত দু’বছর ধরে ভালুকার একটি কারখানায় কর্মরত ছিলেন। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ কারখানায় হঠাৎ একদল বিক্ষোভকারী চড়াও হন। চলে ভাঙচুর। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, টেনে হিঁচড়ে কারখানার বাইরে বের করে আনা হয় দীপুকে। তারপর গণপিটুনি দেওয়া হয় তাঁকে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় দীপুর। এরপর তাঁর দেহ ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে নিয়ে যায় বিক্ষুব্ধ জনতা। গাছে বেঁধে ধরিয়ে দেওয়া হয় আগুন। সঙ্গে চলে স্লোগান। গোটা ঘটনায় অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে রাস্তা। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। কিন্তু কী কারণে তাঁকে খুন করা হল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে সূত্রের দাবি, ধর্ম নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যের জেরেই খুন করা হয়েছে দীপুকে। যদিও তা মানতে নারাজ নিহতের পরিবার।
