সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শেখ হাসিনার সময় বাংলাদেশ ছিল 'ভারতবন্ধু'। কিন্তু মহম্মদ ইউনুসের 'নতুন' বাংলাদেশে সেই সংজ্ঞা বদলে গিয়েছে। নানা ইস্যুতে দু'দেশের মধ্যে দূরত্ব বেড়েছে। এই সুযোগকেই কাজে লাগিয়ে ময়দানে নেমেছে পাকিস্তান। ঢাকা-ইসলামাবাদের 'আঁতাঁতে' চিন্তিত ভারতও। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। ওপার বাংলার জঙ্গি সংগঠন হিজবুত তাহারির সঙ্গে যুক্ত থাকার নানা অভিযোগও রয়েছে মাহফুজের বিরুদ্ধে। ফলে এই খবরে সিঁদুরে মেঘ দেখেছে ভারত।

বাংলাদেশের এক সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, আজ বুধবার তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে পাকিস্তানের হাইকমিশনার মারুফের সঙ্গে দেখা করেন মাহফুজ। জানা গিয়েছে, এই সাক্ষাতে উপদেষ্টা পাকিস্তানে বাংলাদেশি চ্যানেল সম্প্রচারের ক্ষেত্রে পাক সরকারের সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা করেন। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পাকিস্তান হাইকমিশনের প্রেস কাউন্সিলর ফসিহ উল্লাহ ও তথ্য উপদেষ্টার ব্যক্তিগত সচিব সৈয়দ এনামুল কবির। তবে মনে করা হচ্ছে, বর্তমান রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক পরিস্থিতি নিয়েও তাঁদের মধ্যে আলোচনা হয়ে থাকতে পারে।
প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগে ইদের শুভেচ্ছা জানিয়ে ইউনুসকে ফোন করে ইসলামাবাদে যাওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। এছাড়া আগামী ২২ এপ্রিল বাংলাদেশ সফরে আসছেন পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী তথা উপ প্রধানমন্ত্রী ইশহাক দার। এখন যা পরিস্থিতি তাতে একাত্তরের গণহত্যা ভুলে ইউনুসের ‘নতুন’ বাংলাদেশ এখন কাছে টানছে পাকিস্তানকে। সম্প্রতি ইসলামাবাদে গিয়েছিলেন বাংলাদেশের সেনাকর্তারা। এরপর গত ২১ জানুয়ারি সূত্র মারফৎ জানা যায়, পাকিস্তানের চার সদস্যের একটি উচ্চ পর্যায়ের সেনার প্রতিনিধি দল ঢাকায় গিয়েছে। সেই দলেই ছিলেন আইএসআই প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল আসিম, ও আরেক অফিসার। বাংলাদেশের সেনার অফিসারদের সঙ্গে নাকি বৈঠকও করেছেন তাঁরা। তবে এই গোপন সাক্ষাতের বিষয়ে মুখে কুলুপ দু’দেশের।
এই মুহূর্তে বাংলাদেশের নানাপ্রান্তে মার খাচ্ছে হিন্দুরা। কিন্তু পাক নাগরিকদের জন্য দরজা খুলে দিয়েছে ইউনুস সরকার। বিশ্বের যেকোনও জায়গায় থাকা পাকিস্তানের নাগরিক ও বংশোদ্ভূতরা যাতে সহজে ঢাকার ভিসা পান তার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কয়েকদিন আগেই চট্টগ্রাম বন্দরে ভিড়েছে পাক জাহাজ। ব্যবসার ক্ষেত্রেও পড়শি দেশের ব্যবসায়ীদের জন্য বাংলাদেশের বাজার খুলেছে ঢাকা। ২৪ সদস্যের একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল ঢাকায় বৈঠক সেরে গিয়েছে। আর দু’দেশের এই বন্ধুত্বে সিঁদুরে মেঘ দেখছে ভারত। গোটা বিষয়ের উপর কড়া নজর রাখছে নয়াদিল্লি।