সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গত ১৮ ডিসেম্বর ছাত্রনেতা ওসমান হাদির মৃত্যুর পর থেকে উত্তাল বাংলাদেশ (Bangladesh)। হামলা হয়েছে সংবাদমাধ্যমের উপরে। মৌলবাদীরা ভাঙচুর করে আগুন লাগায় প্রথম আলো এবং ডেলি স্টারের দপ্তরে। এবার সে দেশের আরেক সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টিভি বাংলাদেশের 'হেড অব নিউজ' নাজনিন মুন্নিকে (Naznin Munni) সরাতে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলটির কর্তৃপক্ষকে হুমকি দিল কট্টরপন্থী একদল তরুণ। বলা হয়েছে, মুন্নিকে পদ থেকে না সরালে প্রথম আলো, ডেলি স্টারের মতোই দপ্তরে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হবে। হুঁশিয়ারি দেওয়া তরুণরা নিজেদের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য বলে পরিচয় দিয়েছে। প্রশ্ন হল, মৌলবাদী কট্টরপন্থীদের টার্গেট কেন মুন্নি?
বাংলাদেশে অন্যতম জনপ্রিয় টেলিভিশন উপস্থাপক নাজনিন মুন্নি। হুঁশিয়ারি দেওয়া তরুণদের দাবি, গ্লোবাল টিভির তরুণী উপস্থাপক আওয়ামি লিগের সমর্থক। প্রথম আলো'র প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওই তরুণেরা ২১ ডিসেম্বর রাজধানীর তেজগাঁওয়ে অবস্থিত চ্যানেলটির কার্যালয়ে গিয়ে হুমকি দেন। তাঁরা বলেন, নাজনিন মুন্নিকে পদ থেকে না সরালে প্রথম আলো-ডেলি স্টারের মতো ওই অফিসেও তাঁরা আগুন লাগিয়ে দেবেন। উল্লেখ্য, ১৮ ডিসেম্বর রাতে হামলা চালিয়ে প্রথম আলো ও ডেলি স্টার কার্যালয় ভাঙচুর ও আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
গ্লোবাল টিভি বাংলাদেশের নিউজ হেড নাজনিন বুধবার একটি ফেসবুকে পোস্টে তাঁকে ও তাঁর সংস্থাকে হুমকি দেওয়া বিষয়টি জানান। তিনি লিখেছেন, "বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মহানগর শাখা কমিটির নাম করে ৭-৮ জন আমার অফিসে এসে হুমকি দিয়ে গিয়েছে যে চাকরি না ছাড়লে অফিসে প্রথম আলো-ডেলি স্টারের মতো আগুন ধরিয়ে দেবে।" বিষয়টিকে গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক আক্রমণের অংশ হিসাবেই দেখছেন নাজনিন।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে হওয়া কোটা বিরোধী এবং শেখ হাসিনা বিরোধী আন্দোলনের নেতৃত্বে ছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। পরে এই প্ল্যাটফর্ম ও জাতীয় নাগরিক কমিটির যৌথ উদ্যোগে নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) গঠিত হয়। বিশ্লেষকদের বক্তব্য, বর্তমান বাংলাদেশ চালাচ্ছে মৌলবাদী জামাত, কট্টরপন্থী তৌহদি জনতা এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বা এনসিপির নেতারা। যার নেতৃত্ব দিচ্ছেন অধ্যাপক মহম্মদ ইউনুস। পরিকল্পিত ভাবেই কণ্ঠোরোধ করা হচ্ছে মুক্তমনা তথা প্রগতিশীল সংবাদমাধ্যমগুলিকে। যদিও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি রিফাত রশিদ তাঁদের সংগঠনের এক সদস্যের গ্লোবাল টিভির কার্যালয়ে গিয়ে হুঁশিয়ারি স্মারকলিপি দেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। ওই সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও দাবি করেছেন।
