সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশে জবরদখল সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের পৈতৃক ভিটে! মাদারীপুর জেলার ডাসার উপজেলায় প্রয়াত সাহিত্যিকের বাড়িতে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ উঠেছে বিএনপি নেতা সোহেল হাওলাদার ও তাঁর সঙ্গীদের বিরুদ্ধে। স্মৃতি বিজরিত সেই বাড়ির পাঠাগার ভেঙে তৈরি করা হয়েছে চাল রাখার গুদাম। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের বই ও ব্যবহৃত নানা সরঞ্জামও নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ। হাসিনা সরকারের পতনের পর গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল কিংবদন্তী পরিচালক ঋত্বিক ঘটকের পৈতৃক বাড়ি। এবার হামলার শিকার নীললোহিতের ভিটে।
ডাসার উপজেলার কাজীবাকাই ইউনিয়নের পূর্ব মাইজপাড়া মৌজায় ৭ একরের উপর পৈতৃক জমি রয়েছে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের। তার মধ্যে ২ একর ৯৭ শতাংশ জমি সরকারের খাসজমি হিসেবে রেকর্ড করা রয়েছে। সেই জমির একাংশে পুরনো একটি বাড়িতে কয়েক বছর আগে গড়া হয়েছিল সুনীল স্মৃতি পাঠাগার। অভিযোগ, গত শনিবার বিএনপি নেতা সোহেল হাওলাদার ও তাঁর সঙ্গীরা তালা ভেঙে ঢুকে পড়ে সেই পাঠাগারে। ভেঙে তছনছ করে দেওয়া হয় বাড়ির সব কিছু। লেখকের ব্যবহৃত বই, আসবাবপত্র, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি-সহ বহু জিনিস নষ্ট করে দেওয়া হয়। এর পর তাঁরা ওই ঘরে ওএমএসের প্রায় এক ট্রাক চাল রেখে নতুন তালা ঝুলিয়ে দিয়ে চলে যান।
[আরও পড়ুন: পুজোর উপহার থেকেও বঞ্চিত বাংলা! এবার পদ্মার ইলিশ পাঠাবে না বাংলাদেশ]
বাড়িটি এতদিন দেখভালের দায়িত্বে ছিলেন স্থানীয় এক ব্যক্তি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সেই ব্যক্তি জানিয়েছেন, "সরকার পরিবর্তন হওয়ার পর থেকেই সোহেল হাওলাদার লোকজন নিয়ে লেখকের জমি তাঁর নিজের বলে দাবি করেন। আওয়ামি লিগের কয়েকজন কর্মী–সমর্থক তাঁর সমালোচনা করলে তাঁদের বাড়িঘরে হামলা চালান সোহেল। এখন ভয়ে কেউ কথা বলছেন না। এই সুযোগে সোহেল তাঁর লোকজন নিয়ে এখানকার টিনশেড ঘরের তালা ভেঙে নতুন তালা ঝুলিয়ে দেন। ওই ঘরে আবার ওএমএসের চাল রাখেন। বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসন থেকে শুরু করে সবাই জানে।" এই ঘটনার কড়া নিন্দার জানিয়েছেন জেলার সাংস্কৃতিক কর্মী ও সাহিত্যপ্রেমীরা। বর্তমানে ডাসার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) পদ শূন্য রয়েছে। পাঠাগার ভাঙচুরের অভিযোগ স্বীকার করে মাদারীপুরের জেলার কালকিনির ইউএনও উত্তমকুমার দাশ জানিয়েছেন, দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।