টিটুন মল্লিক, বাঁকুড়া: বছরের পর বছর পায়ে লোহার শিকল বাঁধা। বেঁচে থেকেও না বাঁচার জীবন কাটাতে হয়েছে এতদিন। স্বাধীনতা আনন্দ ঠিক কী? দীর্ঘদিন বঞ্চিত থাকার পর অবশেষে সেই স্বাদ পেল বাঁকুড়ার (Bankura) জঙ্গলের একটি হাতি। বহুদিন লোহার বেড়ি পরানো অবস্থায় ঘুরে বেড়ানোর পর বনদপ্তরের উদ্যোগে অবশেষে মুক্তি পেল সে।
জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার বাঁকুড়া উত্তর বন বিভাগের উদ্যোগে বাঁকুড়ার জঙ্গল জুড়ে পায়ে লোহার বেড়ি পরানো অবস্থায় ঘুরে বেড়ানো হাতিটিকে ঘুম পাড়ানি গুলি করে পায়ের বেড়ি খুললো বন দপ্তর। বড় জোড়ার ডাকাইসিনির জঙ্গলে হাতিটিকে ঘুমপাড়ানি গুলি করে অবচেতন করা হয়। তারপরই খুলে ফেলা হয় পায়ের বেড়ি। বনদপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পুরুষ হাতিটির বয়স আনুমানিক ২৫ বছর। একসময় বাঁকুড়ার জঙ্গলে দাপিয়ে বেড়িয়েছে সে। বছর দেড়েক আগে এই বন্যপ্রাণীটির দাপটে অতিষ্ট বনদপ্তর তার চারপায়ে লোহার বেড়ি পরায়। এরপর ফের ওই হাতিটিকে জঙ্গলে ছাড়ার সময় একপায়ে লোহার বেড়ি খুলতে পারেননি বনকর্মীরা।
[আরও পড়ুন: বৈধ ভিসা ছাড়াই গুরুগ্রামে হোটেলের মালিক! মালদহে ধৃত চিনা ‘চর’কে জেরায় চাঞ্চল্যকর তথ্য]
দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে জঙ্গলের ভিতরে বন্ধুর পথে পায়ে লোহার বেড়ি পরে ঘুরে বেড়ানোয় হাতিটির পায়ে গভীর ক্ষতের সৃষ্টি হয়। সম্প্রতি বড়জোড়া সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দাদের নজরে পড়ে হাতিটি। লোহার বেড়ি পায়ে গভীর ক্ষত নিয়ে হাতিটিকে জঙ্গল পথে দেখে সরব হন পশুপ্রেমী ও এই জঙ্গলমহল এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ। মাস খানেক আগেও ঘুমপাড়ানি গুলি করে ওই লোহার বেড়ি হাতিটির পা থেকে খোলার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন বনকর্মীরা। তবে এদিন ওই লোহার বেড়ি থেকে সম্পূর্ণ ভাবে মুক্তি পেয়েছে সেটি। অন্তত এমনটাই দাবি বন দপ্তরের। ক্ষত স্থানের চিকিৎসা করে ওই হাতিটিকে ফের বনে পাঠানো হবে বলেও জানিয়েছেন বনকর্মীরা। এদিকে, এদিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন দুর্গাপুর রেঞ্জের মুখ্য বনপাল কুণাল ডেইভিল। তিনি বলেন, অবশেষে মুক্তি পেল হাতিটি। তবে আগামী একমাস সেটির উপর নজরদারি চালানো হবে।
দেখুন ভিডিও: