shono
Advertisement

মায়ের বাড়ি নিজের নামে লিখিয়ে তাঁকেই তাড়াল ছেলে

স্বামী-বাড়ি হারিয়ে বৃদ্ধা এখন বিচারের আশায় ঘুরছেন রাস্তায় রাস্তায়...
Posted: 07:16 PM Nov 08, 2017Updated: 06:59 PM Sep 25, 2019

টিটুন মল্লিক, বাঁকুড়া: মা’কে বাড়িতে রেখে আন্দামানে ঘুরতে গিয়েছিল ছেলে আর পুত্রবধূ!

Advertisement

দুর্গাপুরে বৃদ্ধাকে একা ঘরে ফেলে আত্মীয়র বাড়িতে চলে গিয়েছিল মেয়ে-জামাই!

বালুরঘাটে বাবাকে রাস্তায় ফেলে রেখেছিল দুই ছেলে ও পুত্রবধূ।

রোজ খবরের কাগজ খুললেই এই খবর এখন আর নতুন নয়। সেই তালিকায় ফের নয়া সংযোজন। জন্মদাত্রী বিধবা মাকে মারধর করে বাড়ি থেকে বার করে দিল ছেলে-বৌমা। পথে পথে কার্যত ভিক্ষা করে দিন গুজরান চলছে অভাগিনী মায়ের।

মুড়ি, তেলেভাজার দোকান চালিয়ে সারা জীবনের জমানো টাকা দিয়ে নবগ্রামে মাথার উপর ছাদ তৈরি করেছিলেন আরতি কর ও তাঁর স্বামী যুবরাজ কর। এক ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে সংসারের খরচ চালিয়ে জমি কিনে কর দম্পতি তৈরি করেন দু’কামরার একটি পাকা বাড়ি। মেয়ের বিয়ে দেওয়ার পরপরই স্বামীকে হারিয়ে আরতি দেবীর সংসারের নোঙর ভেঙে যায়। শখ করে ছেলের বিয়ে দিয়েছিলেন স্বামী। কিন্তু ছেলের বিয়ের পরই তাঁর মৃত্যু হয়। বাবার মৃত্যুর পর সন্তানের আচরণও বদলে যায়। ছেলে-বউমার সংসারে থাকলেও কার্যত পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয় আরতিদেবীকে। স্বামীর স্মৃতি আঁকড়ে তাঁদেরই পরিশ্রমের টাকায় বানানো বাড়িটিকে খড়কুটো মতো আঁকড়ে ধরে বাঁচতে চেয়েছিলেন আরতিদেবী। কিন্তু তাঁর অভিযোগ, বাড়িতে থাকলে অকথ্য অত্যাচার করত ছেলে। এমনকী, ওই বিধবার শেষ সম্বলটুকু, তাঁর বাড়িটি জোর করে নিজের নামে লিখিয়ে নেয় ছেলে।

[বাড়ি থেকে তাড়িয়েছে ছেলে-পুত্রবধূরা, রাস্তাতেই ঠাঁই অসহায় বৃদ্ধের]

মা’কে তাড়িয়ে ওই বাড়িতে বড় দোকান খুলে এখন রোজগারে ব্যস্ত সে। এক ছেলে ও মেয়ে নিয়ে বাড়িতে রঙিন টিভি, সোফা, পালঙ্ক আর মোটরবাইক নিয়ে বিলাসবহুল জীবন কাটাচ্ছে অভিযুক্ত ছেলে সুকুমার কর ও তার স্ত্রী ঝুমা রানি কর। আর বিচারের আশায় পথে পথে ঘুরে, মন্দিরে ভিক্ষা চেয়ে দিন গুজরান করছেন বিধবা আরতিদেবী। মা’কে তাড়িয়ে তাঁরই বাড়ি দখল করে নেওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে অভিযুক্ত সুকুমারকে ফোন করতে সে ফোন কেটে দেয়। অনিশ্চয়তার আঁধারে তলিয়ে যাওয়া এই বিধবা মহিলা বিচারের আশায় আইনের স্বারস্থ হন।

প্রায় এক দশক আগে ছেলে-বউমার নামে বেআইনি দখলদারির অভিযোগ তুলে এবং অন্নবস্ত্রর দাবিতে আরতিদেবী মামলা করেন বাঁকুড়া আদালতে। খোরপোষের ওই মামলার শুনানিতে গতবছরের অক্টোবর অভিযুক্ত ছেলে সুকুমার করকে মাসিক দু হাজার টাকা মা’কে দেওয়ার নির্দেশ দেয় আদালত। সেই নির্দেশ অমান্য করায় সুকুমারকে গ্রেপ্তার করে ছাতনা থানার পুলিশ। কিন্তু পরে সে জেল থেকে ছাড়াও পেয়ে যায়। এদিকে, আদালতের কাজকর্ম চালানোর জন্য অর্থ প্রয়োজন। কিন্তু উকিলের ফি দেওয়ার সাধ্য নেই বিধবা আরতিদেবীর! তাই এখনও সুরাহা হয়নি তাঁর অভিযোগের। আজও আদালতের দরজায় বিচারের অপেক্ষায় ঘুরছেন তিনি। জপছেন ঈশ্বরের নাম। স্বামী তো ফিরবেন না, যদি মাথার উপর ছাদ আর দু’বেলা অন্নটুকু জোটে।

[ছবি: প্রতিবেদক]

[‘মেরে রক্ত বার করে দিয়েছে’, বাবার বিরুদ্ধে থানায় উঠতি মডেল]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
toolbarHome ই পেপার toolbarup মহানগর toolbarvideo শোনো toolbarshorts রোববার