সুকুমার সরকার, ঢাকা: চলতি মাসে শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় বাংলাদেশের গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ও নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মহম্মদ ইউনুস-সহ চারজনকে ছমাস কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। যদিও জামিন মঞ্জুর করা হয় নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদের। কিন্তু এই রায়ের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মহল। ইউনুসের ‘হয়রানি’ নিয়ে হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে আমেরিকা। প্রতিবাদে শামিল অন্যান্য নোবেলজয়ীরা। এবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেওয়া খোলা চিঠিতে স্বাক্ষর করলেন প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও।
জানা গিয়েছে, বাংলাদেশের একমাত্র নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মহম্মদ ইউনুস ও তার ৩ সহকর্মীর বিরুদ্ধে গত ১ জানুয়ারি কারাদণ্ডের রায় দেওয়া হয়। যার প্রতিক্রিয়ায় ১২৫ নোবেল জয়ী-সহ ২৪২ রাষ্ট্রনেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে তৃতীয়বারের মতো খোলা চিঠি দেন। এই পত্রে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে রয়েছেন প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও। প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে লেখা চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী অধ্যাপক মহম্মদ ইউনুসের হয়রানি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হচ্ছে। মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও সুরক্ষার জন্য রাষ্ট্রসংঘের বিশেষ প্রতিবেদক আইরিন খানের সঙ্গেও সকলে ঐকমত্য । তিনি এই রায়কে ‘ন্যায় বিচারের সঙ্গে প্রতারণা’বলে অভিহিত করেছিলেন।’
[আরও পড়ুন: আছড়ে পড়ছে মায়ানমারের গোলা, বাংলাদেশ সীমান্তে ঘর ছাড়ছেন বাসিন্দারা!]
হাসিনা সরকারের উপর চাপ বাড়িয়ে চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, ‘আমরা লক্ষ্য করেছি, বাংলাদেশে গত ৭ই জানুয়ারির নির্বাচনের আগে বিরোধী নেতাদের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। প্রফেসর ইউনুসকে হয়রানি ও ভয় দেখানোর বিষয়ে এর আগে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছিল আপনাকে। এক সাংবাদিক সম্মেলনে এর উত্তরে আপনি বলেছিলেন, চিঠিতে স্বাক্ষরকারীদের উচিত বিশেষজ্ঞ এবং আইনজীবী পাঠানো যাতে তাঁরা নথিপত্র ঘেটে দেখতে পারেন। এখানে কোনও অন্যায় হয়েছে কি না খতিয়ে দেখুন। আমরা আপনার ওই আমন্ত্রণ গ্রহণ করছি।’ এদিকে বাংলাদেশে রাজনৈতিকভাবে কারাগারে বন্দিদের মুক্তির আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন ডোজারিক।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে গ্রামীণ ব্যাঙ্কের মাধ্যমে ক্ষুদ্রঋণ ব্যবস্থা চালু করেন মহম্মদ ইউনুস। গ্রামীণ টেলিকমের মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও মজবুত করেছেন ইউনুস বলেও মনে করেন অনেকে। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। কিন্তু এই দুই প্রতিষ্ঠানেই বিস্তর আর্থিক কেলঙ্কারি হয়েছে বলে অভিযোগ। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, বেআইনিভাবে শ্রমিক ও কর্মীদের মধ্যে বণ্টনের জন্য সংরক্ষিত লভ্যাংশের পাঁচ শতাংশ লোপাট।