অর্ণব দাস, বারাসত: ভিআইপি রোড সংলগ্ন তেঘরিয়ায় পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু ছাত্রের। তাঁর পরিবারকে হেনস্তার অভিযোগ উঠল পুলিশের বিরুদ্ধে। ওই ছাত্রের দেহও দেখতে দেওয়া হয়নি বলেই অভিযোগ। বৃহস্পতিবার রাতে বারাসত সরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তাঁদের হেনস্তা করা হয় বলেই দাবি। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুলিশ। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সল্টলেকের সিএস স্কুলের একাদশ শ্রেণির ছাত্র অঙ্গীকার দাশগুপ্ত অন্যান্য দিনের মতো বৃহস্পতিবারও স্কুল ছুটির পর বাসে করে ফিরছিল। তেঘরিয়া পেরিয়ে চলন্ত বাস থেকে নামার সময় পা পিছলে রাস্তায় পড়ে বাসের পিছনের চাকায় সে পিষ্ট হয়।
অভিযোগ, পুলিশ মৃতের পরিবারকে না জানিয়ে তড়িঘড়ি ছাত্রকে উদ্ধার করে বারাসত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কয়েক ঘন্টা পর স্থানীয় একজনের থেকে দুর্ঘটনার খবর জানতে পেরে ছাত্রের পরিবার দুর্ঘটনাস্থলে যায়। সেখানে থেকেই তারা বারাসত মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার খবর জানতে পারেন। শেষমেষ ছাত্রের পরিবারের হাসপাতালে পৌঁছতে রাত হয়ে যায়। তাঁদের অভিযোগ, জরুরি বিভাগে মৃত ছেলের বিষয়ে জানতে চাইলে কোন সহযোগিতা করেননি কর্তব্যরত চিকিৎসক। এনিয়ে দুপক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি থেকে উত্তেজনা ছড়ালে হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্প থেকে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে।
[আরও পড়ুন: মাগুর চাষ করতে খাটের তলায় সুড়ঙ্গ! কুলতলির ‘টানেল ম্যান’ সাদ্দামের দাবিতে রহস্য]
অভিযোগ, পুলিশ এসে সন্তানহারা মা-বাবাদের সহযোগিতা করা তো দূর, উলটে মৃতের পরিবারকেই হেনস্তা করে। তাদের মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ পরিবারের। মৃতের মা বলেন, "ছেলের কাছে স্কুলের পরিচয়পত্র ছিল। তবুও বিধাননগর কমিশনারেটের পুলিশ দুর্ঘটনার খবর আমাদের জানায়নি। দুর্ঘটনাস্থল সংলগ্ন বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে না গিয়ে পুলিশ দূরের বারাসত হাসপতালে নিয়ে যায়। তার পরেও আমাদের না জানিয়ে ছেলের দেহ মর্গে ঢুকিয়ে দিল। ছেলের দেহ দেখতে চাওয়ায় উলটে পুলিশ আমাদের হেনস্তা-সহ মারধর করে।" মৃতের দাদু গৌতম সেনগুপ্ত বলেন, "আমরা মৃতদেহ দেখতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তাতে রাজি হয়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বরং আমাদের সঙ্গে অশোভন ব্যবহার করেছে। পরে পুলিশ আমাদের হেনস্তা এবং মারধর করে। উদ্ধত আচরণ করেছে।"
হাসপাতালের সুপার ডাঃ সুব্রত মণ্ডল বলেন, "একাদশ শ্রেণির পড়ুয়াকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল। তাই মৃতদেহ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়ে দিয়েছে। পুলিশের অনুমতি ছাড়া কাউকেই মর্গে ঢুকতে দেওয়া হয় না। এক্ষেত্রেও করা হয়নি। পরে পুলিশের সঙ্গে কি হয়েছে, সেটা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিষয় নয়।" যদিও হেনস্তা, মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুলিশ। এবিষয়ে বারাসত জেলার পুলিশ সুপার প্রতীক্ষা ঝাড়খড়িয়া জানান, "হাসপাতালে গণ্ডগোলের খবর কতৃপক্ষ পুলিশকে জানালে প্রথমে সাদা পোশাকে পুলিশ সেখানে যায়। তখন পুলিশকেই প্রথমে হেনস্তার শিকার হতে হয়। মারধরের কোন ঘটনা ঘটেনি। সন্তানহারা মা, বাবার সঙ্গে কেন পুলিশ অমানবিক হতে যাবেন? পরে পুলিশের সহায়তাতেই পরিবার মৃতদেহ দেখেছেন।"