অর্ক দে, বর্ধমান: স্কুল প্রাঙ্গনে গাছের রহস্যজনক মৃত্যু।পরিকল্পিত খুনের অভিযোগ নিয়ে পুলিশের দ্বারস্থ স্কুলের প্রধান শিক্ষক (প্রাথমিক বিভাগ)। এমন অবাক করে দেওয়া কাণ্ড ঘটেছে বর্ধমানে। তবে বর্ধমানের (Bardhaman) ঐতিহ্য বিজড়িত বিদ্যালয়ে গাছের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে হাজির হয়েছে পুলিশ। যা নিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষের অন্দরে চাপানউতোর তৈরি হয়েছে। পুলিশ আসার ঘটনায় স্কুলের মর্যাদাহানি হয়েছে বলে অভিযোগ স্কুলের মাধ্যমিক বিভাগের প্রধান শিক্ষকের।
বর্ধমান পৌর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রথমিক বিভাগের ভবনের সামনে প্রায় পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে রয়েছে একটি শিরীষ গাছ। গাছের গোড়াটি বাঁধিয়ে পাকা করে দেওয়া হয়েছিল। নিয়মিত পরিচর্যা করা হত গাছটি। বহু প্রাচীন এই গাছটিতে সম্প্রতি জড়া ধরতে শুরু করেছিল। তা লক্ষ্য করেন শিক্ষকরা। গাছের সমস্ত পাতা শুকিয়ে ঝরে গিয়েছিল। প্রায় তিনতলা সমান লম্বা গাছটি হঠাৎ করেই কীভাবে শুকিয়ে গেল তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে।
[আরও পড়ুন: করোনা আবহে ফের টিকা বিভ্রাট, ভ্যাকসিন না নিয়েই Vaccinated পানিহাটির প্রৌঢ়!]
স্কুলের প্রধান শিক্ষক (প্রাথমিক) বিশ্বজিৎ পাল বলেন, “গত বছরও স্কুলের একটি গাছ রহস্যজনকভাবে শুকিয়ে গিয়েছিল। প্রাথমিক বিভাগের সামনে থাকা এই শিরীষ গাছটি ৪০ বছরেরও বেশি পুরোনো। বেশ কয়েকদিন ধরেই গাছটির পাতা ধীরে ধীরে ঝরে যাচ্ছিল। এখন গাছটি শুকিয়ে গিয়েছে। কী কারণে এই ধরনের ঘটনা ঘটছে, তা জানা উচিৎ বলে মনে হয়েছে। বর্ধমান থানায় বিষয়টি বিস্তারিত জানিয়েছি। এটির সঠিক তদন্ত দাবি করছি আমরা।” তিনি সন্দেহ প্রকাশ করেন, কোনও অসৎ উদ্দেশে গাছটি মেরে ফেলা হতে পারে। তদন্ত করলেই সঠিক কারণ জানা যাবে বলে মনে করছেন তিনি।
এদিকে স্কুল প্রাঙ্গনে শিরীষ গাছের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিভাগের মধ্যে মতানৈক্য প্রকাশ্যে এসেছে। প্রাথমিক বিভাগের দায়ের করা অভিযোগের বিরুদ্ধে বর্ধমান থানায় পালটা অভিযোগ করেন মাধ্যমিক বিভাগের প্রধান শিক্ষক শম্ভুনাথ চক্রবর্তী। অভিযোগ পত্রে তিনি জানিয়েছেন, বিদ্যালয়ের ‘শতবর্ষ ভবন’ লাগোয়া যে গাছটি মারা যাওয়ার কথা বলা হচ্ছে সেটি প্রাথমিক বিভাগের আওতাতেই পরে না। তাছাড়া, এই বিষয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত ছিল। শতাব্দী প্রাচীন বিদ্যালয়ে পুলিশে আসার ফলে বিদ্যালয়ের গরিমা নষ্ট হয়েছে। তাই অভিযোগের আইনত বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে বলে অভিযোগ পত্রে জানিয়েছেন তিনি।
[আরও পড়ুন: প্রথমবার বড় সাফল্য! কানাডায় পাড়ি দিচ্ছে নদিয়ার যুবকের হাতে গড়া দুর্গা]
অন্যদিকে, বিষয়টি নিয়ে প্রাথমিক বিভাগের প্রধান শিক্ষক বিশ্বজিৎ পাল বলেন, “গাছটি বিদ্যালয়ের সম্পত্তি। আমি একটি বিভাগের প্রধান হিসেবে বিষয়টি প্রশাসনকে জানিয়েছি। গাছের মৃত্যুর কারণ নিয়ে সঠিক তদন্ত হওয়া উচিত বলে আমার মনে হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “বিদ্যালয়ের গরিমা নষ্ট হওয়ায় যে বিষয়টি সামনে আসছে সেটি ঠিক নয়। স্কুলের সম্পত্তি নষ্ট হচ্ছে বলেই প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।”