নন্দন দত্ত, সিউড়ি: আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে আগাম প্রার্থী ঘোষণা করায় অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mandal) কঠোর সমালোচনা করলেন রাজ্যের গ্রন্থাগার ও জনশিক্ষা প্রসার মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরি (Siddiqullah Chowdhury)। বীরভূমের তৃণমূল সভাপতির এহেন কাজ দলের অনুশাসন বিরোধী এবং বিভাজন সৃষ্টিকারী বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। তাঁর মতে, পঞ্চায়েত নির্বাচন না করিয়ে যেমন ভুল করেছিলেন, এবার আগেভাগে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে একই ভুল করছেন অনুব্রত। সিদ্দিকুল্লা চৌধুরির মতে, পাশের বর্ধমান জেলায় আউশগ্রাম, কেতুগ্রাম, মঙ্গলকোটের সংগঠনকে ক্যানসারে পরিণত করেছেন বীরভূমের নেতারা। যদিও সিদ্দিকুল্লার কটুক্তি, অভিযোগ হেলায় উড়িয়ে দিয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল।
শুক্রবার সদাইপুর থানার যাত্রা গ্রামের মাদ্রাসায় জমিয়তে উলমায়ে হিন্দের একটি সভায় যোগ দিতে আসেন সিদ্দিকুল্লা চৌধুরি। তিনি জানান, ‘‘জমিয়তে এখনও তৃণমূলকে সমর্থন করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর আস্থা রেখে। দলকে শক্ত করতে হবে। কেউ যদি ভাবে, সিদ্দিকুল্লা চৌধুরির দলের কেউ ঘাসপাতা খায়, তাহলে ভুল করবে। কিন্তু কেউ যদি দল বিক্রি করে খেতে চান, আর যা খুশি তাই বলেন, তা মেনে নেওয়া হবে না। সব আস্ফালনের উত্তর পাবলিক দেবে। চাবুক মারুন পিঠে। দল বড়, ব্যক্তি ছোট।’’
[আরও পড়ুন: নিখোঁজ করোনা রোগীর দেহ মিলল পুকুরে, ক্ষোভে হাসপাতালে তাণ্ডব মৃতের পরিবারের]
এরপরেই ইঙ্গিতপূর্ণ কটাক্ষ করে বলেন ‘‘দল থেকে সরে গেলে বোঝা যাবে, তার ৭০ কেজি ওজন না ৫ কেজি ওজন।’’ তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, কবে নির্বাচন হবে তার দিনক্ষণ ঘোষণা নেই, আর একের পর এক সভায় প্রার্থীর নাম ঘোষণা হয়ে যাচ্ছে। যদিও সিদ্দিকুল্লা চৌধুরির এসব মন্তব্য নিয়ে অনুব্রত মণ্ডলের প্রতিক্রিয়া, তিনি কোথাও কোনও প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেননি। তাঁর কাছে সেই সব সভার ফুটেজ আছে। তিনি তাঁর দলের এলাকার জনপ্রিয় বিধায়কদের উন্নয়নের প্রসঙ্গে কথা বলেছেন।
[আরও পড়ুন: পুজোর এক সপ্তাহ আগে শীর্ষে রাজ্যের করোনা সংক্রমণ, উদ্বেগের কেন্দ্রে কলকাতাই]
আউশগ্রাম, কেতুগ্রাম, মঙ্গলকোটের পর্যবেক্ষক হিসাবে অনুব্রত মণ্ডলের কাজকর্ম নিয়েও সিদ্দিকুল্লাহ তীব্র কটাক্ষ করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘ওই তিন বিধানসভা এলাকা বীরভূমের নেতারা ক্যানসার তৈরি করে দিয়েছেন। পচা আলু ভাল আলুকে পচিয়েছে। আমি তার প্রতিবাদ করছি।’’ সিদ্দিকুল্লা চৌধুরি আরও বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন বড়। তাই পুরনো কর্মীদের এখনও দলে রেখেছেন। সবাইকে নিয়ে চলেন। তার মানে কেউ যদি নিজেকে মহান ভেবে নেয়, তাহলে সে অঙ্ক বোঝে না।’’
অনুব্রত মণ্ডল অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে তোলা সব অভিযোগ উড়িয়ে দেন। বলেন, ‘‘উনি কী বলেছেন, তা আমার জেনে লাভ কী? আমি কোথাও কোনও প্রার্থীর নাম ঘোষণা করিনি। আর কে কোথায় কী বলে গেল, তাতে আমার কিছু এসে যায় না।’’