সুমন করাতি, হুগলি: দীর্ঘদিন ধরে উপাচার্যহীন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়। যার জেরে সমস্যায় বহু পড়ুয়া। হুগলির বাসিন্দা সায়ন কর্মকার ডিআরডিও-তে চাকরি পেয়েও যোগ দিতে পারছিলেন না। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্স পাশ করলেও সার্টিফিকেট মেলেনি। ফলে ডকুমেন্ট ভেরিফিকেশনে আটকে গিয়েছিল তাঁর। এমন পরিস্থিতিতে এগিয়ে এলেন খোদ রাজ্যপাল। রাজভবনে ডেকে পড়ুয়ার সমস্যার কথা শুনলেন। এমনকী, পড়ুয়াদের মুশকিল আসান হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তর্বর্তী উপাচার্যও নিয়োগ করলেন রাজ্যপাল।
চন্দননগরের কানাইলাল স্কুল থেকে বিজ্ঞান নিয়ে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে টেকনো ইন্ডিয়া ইউনিভার্সিটি থেকে বিটেক করেন সায়ন। এরপর ২০১৭-১৮ সালে রাজারহাটের ডিরোজিও মেমোরিয়াল কলেজ থেকে ফটোগ্রাফি অ্যান্ড ভিডিও প্রোডাকশন নিয়ে ডিপ্লোমা করেন। তার আগে বেলুড় রামকৃষ্ণ মিশন কলেজ থেকে ৬ মাসের সার্টিফিকেট কোর্সও করেছিলেন তিনি। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ডিআরডিওতে টেকনিক্যাল ফটোগ্রাফার টেকনিশিয়ান পদের জন্য পরীক্ষায় বসেন। লিখিত পরীক্ষায় পাশও করেন। এপ্রিল মাসের ৩ তারিখ পুণেতে গিয়ে মৌখিক পরীক্ষা দেন। ৭ মে রেজাল্ট বের হয়। ১২ মে ডকুমেন্ট ভেরিফিকেশনের চিঠি আসে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্য না থাকায় শংসাপত্র না পাওয়ায় চাকরিতে যোগ দিতে পারছিলেন না সায়ন।
[আরও পড়ুন: ‘প্রত্যেক মরশুমে সঙ্গী বদলে ফেললে…’, লিভ ইন সম্পর্ককে তোপ এলাহাবাদ হাই কোর্টের]
দোরে দোরে হত্যে দিয়েও সুরাহা হয়নি। তারপর সায়ন রাজ্যপালের কাছে এই বিষয়টি নিয়ে আবেদন জানান। অবশেষে শুক্রবার রাজভবনে ডাক পান সায়ন। আশ্বাস পান, আগামী সোমবারই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শংসাপত্র পাবেন তিনি। ইতিমধ্যে, সায়নের সমস্যা নিয়ে খবর হওয়ার পর বৃহস্পতিবার রাতেই পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তর্বর্তিকালীন উপাচার্য নিয়োগের ঘোষণা করেছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। উপাচার্যের সই থাকা শংসাপত্র হাতে পেতে আর সমস্যা হওয়ার কথা নয় হুগলির চুঁচুড়ার বাসিন্দা সায়নের।
সায়ন জানান, “গতকাল সকাল সাড়ে ছ’টা নাগাদ রাজ্যপাল ভবন থেকে আমায় ফোন করে জানানো হয় যে সকাল দশটা থেকে সাড়ে দশটার মধ্যে আমি রাজভবনে যেতে পারব কি না। কারণ রাজ্যপাল সরাসরি আবার মুখ থেকে আমার বিষয়টা শুনতে চাইছেন।” গতকাল রাজভবনে গিয়ে রাজ্য পালের সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে দেখা করে সায়ন। গতকাল রাজভবনে রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাতের পর সায়ন বলে “বাবা-মায়ের স্বপ্ন অবশেষে পূরণ করতে পারব, ভাবিনি কখনও। গতকালের দিনটি স্বপ্নের মতো কাটল। সারা জীবন মনে রাখার মতো দিন।” সায়নের বাবা স্বপনবাবু জানান, “আমার ছেলের বিষয়টি নিয়ে রাজ্যপাল যেভাবে দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে তার জন্য আমি তাঁকে প্রণাম জানাই। রাজ্যপালের এই পদক্ষেপের জন্য সায়নের স্বপ্নপূরণ যে হবে এটা ভেবেই ভাল লাগছে।”
[আরও পড়ুন: পুজোর কলকাতায় একটুকরো ইংল্যান্ড, ৩০০ ফুট রাস্তাজুড়ে লন্ডনের অর্নামেন্টাল ডিজাইন]