স্টাফ রিপোর্টার, শিলিগুড়ি: বন্যপ্রাণ ও তাদের দেহাংশ পাচার চক্রে জড়িত কেন্দ্রীয় বাহিনীর দুই জওয়ান গ্রেপ্তার। ধরা পড়েছে ওই দু’জনের সঙ্গী আরও ৩ জন। বৃহস্পতিবার রাতে নকশালবাড়িতে (Naxalbari) এসএসবির ৪১ ব্যাটালিয়ন, টুকরিয়া ঝাড় বনাঞ্চল এবং শিলিগুড়ি ওয়াল্ডলাইফ ক্রাইম কন্ট্রোল ব্যুরোর হাতে ৯৪৫ গ্রাম হাতির দাঁত-সহ পাঁচজন গ্রেপ্তার হয়।
ধৃতদের নাম তপন থাপা, প্রভু মুন্ডা, শ্রিয়ান খেরিয়া, ধরম দাস লোহার, রিয়াস প্রধান। এদের মধ্যে প্রথম চারজন আলিপুরদুয়ারের কালচিনির বাসিন্দা। রিয়াস পূর্ব সিকিমের বাসিন্দা। তপন থাপা মিজোরামে বিএসএফে এবং রিয়াস আইআরবির দিল্লিতে কর্মরত কনস্টেবল। ধৃতদের শুক্রবার শিলিগুড়ি আদালতে তুলে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে বন দফতর। হাতির দাঁত-সহ জওয়ানদের ধরা পড়ার ঘটনা চাউর হতে বিশেষজ্ঞদের অনেকে আলিপুরদুয়ারের অসম সীমানা সংলগ্ন সঙ্কোশ নদীতে পাওয়া হাতির ছিন্নভিন্ন দেহের সঙ্গে ঘটনার সংযোগ রয়েছে কি না সেটা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। যদিও দুটি ঘটনা ভিন্ন বলে দাবি করেন বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।
[আরও পড়ুন: ‘একটু কমিয়ে দিতে বলুন না’, মহিলার আবেদনে অবাক ফিরহাদ]
তিনি বলেন, “প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, ওই দাঁতটি অসমের জঙ্গল থেকে এনে নকশালবাড়ি হয়ে নেপালে পাচারের উদ্দেশ্যে রাখা ছিল।” জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে নকশালবাড়ি বাসস্ট্যান্ডে অভিযান চলে। সেখানে ধৃতদের এক জায়গায় জড়ো হয়ে অপেক্ষা করতে দেখে সন্দেহ হয় বন আধিকারিকদের। তাদের আটক করে তল্লাশি চালালে সঙ্গে থাকা একটি ব্যাগ থেকে হাতির দাঁত উদ্ধার হয়। এরপরে বন দপ্তরে নিয়ে যাওয়া হয় ওই ৫ জনকে। তাদের কাছে থাকা নথি দেখে বন আধিকারিকেরা তপন ও রিয়াসের পরিচয় জানতে পারেন। রাতেই বিএসএফ আধিকারিকদের খবর দেওয়া হয়। বিএসএফ আধিকারিকদের উপস্থিতিতে তাদের টানা চার ঘণ্টা জেরা করা হয়। রাত প্রায় পৌনে বারোটা নাগাদ ধৃতদের নকশালবাড়ি থানার হাতে তুলে দেওয়া হয়। এরপর পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে।
প্রাথমিক তদন্তের পর বন আধিকারিকরা জানতে পারে মিজোরামের একাধিক জঙ্গল সংলগ্ন পোস্টে চাকরি করত তপন। একইভাবে নিজের চাকরির গোড়ার দিকে রিয়াসের পোস্টিং ছিল অসমের জঙ্গল সংলগ্ন এলাকায়। এই দু’জনের সঙ্গে বাকি পাচারকারীদের দীর্ঘদিনের পরিচয়ের সুবাদে বাড়তি মুনাফার লোভে চক্রে যোগ দেয় দুই কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান। তবে, এই প্রথম পাচার কাজ তারা করছিল নাকি এর আগেও একাধিক ঘটনায় তারা যুক্ত ছিল তা জানা যায়নি। বন আধিকারিকদের একাংশের দাবি, ধৃতদের লাগাতার জেরা করলে একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য তাদের হাতে আসবে। যার মাধ্যমে এই চক্রের নেটওয়ার্ক ঠিক কতদূর পর্যন্ত বিস্তৃত তা জানা যাবে।
