সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: ন্যাশনাল ডিফেন্স একাডেমি অর্থাৎ NDA-র প্রবেশিকা পরীক্ষায় পুরুলিয়া সৈনিক স্কুলের ৩৬ জন পড়ুয়া উত্তীর্ণ হয়ে বাংলার নাম উজ্জ্বল করল। গত ১৫ বছরে এমন সাফল্যের মুখ দেখেনি এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এই ৩৬ জনের মধ্যে ১৭ জনই বাঙালি ক্যাডেট।
দেড় দশক পর জাতীয় স্তরের এই সাফল্যে গর্বিত পুরুলিয়া সৈনিক স্কুল কর্তৃপক্ষ। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ গ্রুপ ক্যাপ্টেন জি প্রবাহর বলেন, “মৌখিক ইন্টারভিউতে যাতে এই সফল পড়ুয়ারা তাদের নিজের দক্ষতা সঠিকভাবে তুলে ধরে সাফল্যের মুখ দেখতে পারে সেজন্য আমরা বিশেষ কার্যক্রম নিয়েছি। এই সাফল্য দেশের সেনাবাহিনীতে যোগদানের ক্ষেত্রে যুব সমাজকে আরও উজ্জীবিত করবে।”
[আরও পড়ুন: বাড়ির পরিচারিকার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা! অবশেষে ‘কোটিপতি’ কনস্টেবলের সেই বান্ধবীর মিলল খোঁজ]
UPSC-র মাধ্যমে NDA-র প্রবেশিকা পরীক্ষায় এক সাথে ৩৬ জনের উত্তীর্ণ হওয়ার ঘটনা রাজ্যের শিক্ষার মানকে উজ্জ্বল করেছে। একথা বলছে কেন্দ্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হওয়া পুরুলিয়ার সৈনিক স্কুল কর্তৃপক্ষই। সমগ্র দেশে ৩৩টি সৈনিক স্কুলের ৩ লাখের বেশি পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় বসেছিলেন। তার মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ৭,৮৩৬ জন। এর মধ্যে ২৭ টি সৈনিক স্কুলের ৭৬১ জন রয়েছে। যার মধ্যে পুরুলিয়া সৈনিক স্কুলের ৩৬ জন থাকায় একে বড়সড় সাফল্য হিসেবে দেখছে বাংলার সৈনিক স্কুল কর্তৃপক্ষ। এ রাজ্যে এই আবাসিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান একটিই রয়েছে।
সেনাবাহিনীতে যোগদানের লক্ষ্যকে সামনে রেখে দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তত্ত্বাবধানে ১৯৬২ সালে পুরুলিয়া-রাঁচি সড়কে ২৭৯ একর জায়গা জুড়ে গড়ে উঠেছিল এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যোগদানের জন্য শারীরিক ও মানসিকভাবে তৈরি করা হয়। বছরের পর বছর ধরে স্কুলের শিক্ষার্থীরা সশস্ত্র বাহিনী থেকে শুরু করে সিভিল সার্ভিস, রাজনৈতিক নেতৃত্ব এবং কর্পোরেট পর্যন্ত সব ক্ষেত্রেই তারা নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করেছে। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকেই দেশের প্রাক্তন বায়ুসেনা প্রধান অরূপ রাহার মত সেনা প্রধানরা শিক্ষা লাভ করেন। সেই সাফল্যের কাছাকাছি যেন পৌঁছতে চাইছে এই সফল ক্যাডেটরা। প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ দুই বাঙালি ক্যাডেট শৌভিক ঘোষ, সৌম্যদীপ পাল জানায়, “লক্ষ্যে পৌঁছাতেই হবে। সেনাবাহিনীতে যোগদানই এখন আমাদের পাখির চোখ।”