অরূপ বসাক, মালবাজার: হাতির হানায় রবিবার মারা গিয়েছেন দু'জন। আরও দু'জন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। গত পাঁচদিনে আলিপুরদুয়ারের মালবাজারে চারজন হাতির হানায় মারা গিয়েছেন। ক্রমাগত হাতির হামলায় প্রাণ যাওয়ায় আতঙ্ক বাড়ছে ওইসব এলাকায়। আজ সোমবার মালবাজার মহকুমার ক্রান্তি ব্লকের কাঠামবাড়ি বনদপ্তরের উদ্যোগে বন বস্তি এলাকায় একটি সচেতনতা শিবিরের আয়োজন করা হল। বনের ভিতর যাতে সাধারণ মানুষরা না যান। সেই বার্তা আবারও দেওয়া হল বলে খবর।
জঙ্গল লাগোয়া বনবস্তি এলাকার বাসিন্দারা জ্বালানির কাঠ সংগ্রহের জন্য বনের ভিতর যাচ্ছেন। বনকর্মীরা এর আগেও একাধিকবার বনের ভিতর না যাওয়ার বার্তা দিয়েছিলেন। কিন্তু তারপরেও বনের ভিতর মানুষজন যাচ্ছেন বলে অভিযোগ। এছাড়াও লোকালয়েও হাতির হানা দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন সময়ে। গত দু'দিন ক্রান্তি ব্লকের আপালচাঁদ বনাঞ্চল সংলগ্ন এলাকায় জ্বালানি কাঠ সংগ্রহ করতে গিয়ে হাতির আক্রমণে তিনজনের মৃত্যু হয়। দুজন গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। এরপরই নড়েচড়ে বসল আপালচাঁদ বন বিভাগ। সোমবার ক্রান্তি ব্লকের বন বস্তি এলাকায় বন বিভাগের তরফে একটি সচেতনতামূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়। উপস্থিত ছিলেন ক্রান্তি ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির বন কর্মাধ্যক্ষ পরিশ্রম চিক বড়াইক, বৈকন্ঠপুরের এডিএফও ম্যাডাম মঞ্জুলা তিরকি, কাঠামবাড়ি রেঞ্জ অফিসার নবাঙ্কুর ঘোষ। এছাড়াও রাজাডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্যারাও ছিলেন।
সোমবার গ্রামে চলছে সচেতনতা শিবির। নিজস্ব চিত্র
জঙ্গলের ভিতর এখন বুনো হাতির দল ঘোরাঘুরি করছে। জঙ্গলের ভিতর কেউ যাতে না যায়, এদিন বারবার সেই আবেদন করা হয়েছে আধিকারিকদের থেকে। শুধু তাই নয়, জঙ্গলে এখন শুকনো পাতা ছড়িয়ে রয়েছে। সেখানে কেউ যাতে আগুন না ধরান, সেই অনুরোধও করা হয়েছে। লোকালয়ে হাতির দল ঢুকলে দ্রুত বন দপ্তরকে খবর দিতেও বলা হয়েছে এদিন। এই ব্যাপারে মালের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের হিমালয়ান ইকোলজি ফাউন্ডেশনের অন্যতম সদস্য মৃণাল সিংহ রায় বলেন, "বার বার সচেতন করার পরও কিছু মানুষ শুনছে না। মাঝেমধ্যেই দেখা যায় জঙ্গলে রাস্তায় অবাধে চলছে টোটো রিস্কা। এখানেও বিপদ ঘটতে পারে। জঙ্গলে রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় দু'দিক দেখে গাড়ি বা বাইক চালানো উচিত। এব্যাপারে আমাদের সংগঠন থেকেও বন বস্তিতে ক্যাম্প করব আমরা।" বৈকন্ঠপুরের ডিএফও রাজা এম বলেন, "ছয় সদস্যের একটি টিম তৈরি করা হয়েছে। একটি নির্দিষ্ট হাতি হামলা চালাছে কিনা খতিয়ে দেখা হছে।"