শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: মহারাষ্ট্রে ভয়াবহ ক্রেন দুর্ঘটনায় মৃত জলপাইগুড়ির ৪ যুবক। এদের মধ্যে দুজন ধুপগুড়ির ও দু’জন ময়নাগুড়ি ব্লকের বাসিন্দা বলে জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে। কান্নায় ভেঙে পড়েছে পরিবার।
জানা গিয়েছে, মহারাষ্ট্রের একটি সংস্থায় নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করতেন জলপাইগুড়ি জেলার দশজন যুবক। সোমবার রাতে দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার পর থেকে উদ্বেগ বাড়ছিল পরিবারে। চারযুবকের সঙ্গে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করে উঠতে পারছিলেন না পরিবারে সদস্যরা। পরে প্রশাসনের তরফে একে একে মৃত্যুর খবর আসে বাড়িতে। জলপাইগুড়ির জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু জানান, মহারাষ্ট্রের থানে জেলার শাহানপুরে ক্রেন দুর্ঘটনায় জলপাইগুড়ি জেলার চার যুবকের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে ধুপগুড়ি ব্লকের পশ্চিম ডাউকিমারির গণেশ রায় (৩৮), ডাউকিমারির উত্তর কাঠুলিয়া গ্রামের প্রদীপ রায় (৩৬) এবং ময়নাগুড়ি ব্লকের চারেরবাড়ি গ্রামের সুব্রত সরকার (২৪), বলরাম সরকার (২৮) রয়েছেন। চারজনই শ্রমিকের কাজ করতেন।
[আরও পড়ুন: তাঁর উত্থানে অখুশি তৃণমূলের একাংশ? একান্ত সাক্ষাৎকারে কী বললেন ‘ভাইরাল’ রাজন্যা]
সূত্রের খবর, শ্রমিকের কাজ করতে যাওয়া জেলার বাকি ছয় যুবক সুস্থ রয়েছে বলে খবর। মঙ্গলবার দুপুরের পর মৃত্যুর খবর পৌঁছাতেই শোকের ছায়া নেমে আসে ধুপগুড়ি পশ্চিম ডাউকিমারী, উত্তর কাঠুলিয়া ও ময়নাগুড়ির চারের বাড়ি গ্রামে। পেটের তাগিদে ও বাড়তি উপার্জনের আশায় ভিনরাজ্যে কাজ করতে গিয়েছিলেন গনেশ। তাঁর সঙ্গে গিয়েছিল গ্রামের আরও বেশ কয়েকজন যুবক। পরিবারে রয়েছেন মা, স্ত্রী, এক পুত্র ও দুই কন্যা। গণেশ ছিলেন বাড়ির একমাত্র উপার্জনকারী সদস্য। স্ত্রী প্রতিমা রায় জানান, রাতে শেষবার কথা হয়েছিল। তখন বলছিলেন ২৮ দিন পর বাড়ি ফিরবেন। বাবা ফিরছে খবরে উচ্ছ্বসিত ছিল ছেলেমেয়েরা। কিন্তু সব কিছুই কেমন যেন ওলটপালট হয়ে গেল। মাঝে মাঝেই সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়ছেন প্রতিমা দেবী। ময়নাগুড়িব্লকের চারেরবাড়ি গ্রামের সুব্রত সরকার ও বলরাম সরকার-সহ পাঁচ যুবক একসঙ্গে মহারাষ্ট্রে শ্রমিকের কাজে গিয়েছিলেন। দুই যুবককে হারিয়ে এখন শোক স্তব্ধ গোটা গ্রাম। এখন দেহ কখন আসবে সেই অপেক্ষায় সকলেই।
ময়নাগুড়ির বিডিও শুভ্র নন্দী জানান, প্রশাসনের তরফ থেকে নির্মাণকারী সংস্থা এবং মৃতদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন তারা। বিকেলে ময়নাতদন্তের কাজ শেষ হয়েছে। রাতেই মহারাষ্ট্র্ থেকে মৃতদেহ সড়ক পথে রওনা দেবে বলে জানতে পেরেছেন তারা।
