ব্রতদীপ ভট্টাচার্য: গোটা শরীরে দাউদাউ করে জ্বলছে আগুন। মুখে বাঁচাও বাঁচাও করে আর্ত চিৎকার। সহসা তাঁকে দেখে চেনার উপায় নেই। আচমকা এই দৃশ্য দেখে অবাক হয়ে যান বরাহনগরের লেকভিউ পার্কের বাসিন্দারা। কী কারণে মহিলার এই অবস্থা, তা বুঝতে পারেননি কেউই। পরে জানা যায়, সম্পত্তিগত বিবাদের জেরে ছোট জা ওই মহিলাকে পুড়িয়ে দিয়েছে। এই ঘটনায় নিহতের ছোট জাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বছর আটচল্লিশের শ্যামলী দাসের বিয়ে হয় বেশ কয়েক বছর আগেই। তার বছর কয়েক ছোট জা বাড়িতে আসে। তবে ছোট জা সুস্মিতা দাসের সঙ্গে সুসম্পর্ক নেই তাঁর। সম্পত্তিগত বিবাদের জেরেই অশান্তি ক্রমশ চরমে পৌঁছয়। গত রবিবার বরাহনগরের লেকভিউ পার্কের দুই জায়ের মধ্যে অশান্তি বড়সড় আকার নেয়। অভিযোগ, বড় জা শ্যামলীর গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয় ছোট জা সুস্মিতা। জ্বলন্ত অবস্থায় রাস্তায় বেরিয়ে পড়েন শ্যামলী। বাঁচাও, বাঁচাও করে চিৎকার করতে থাকেন তিনি। পাড়া প্রতিবেশীরা মহিলার আর্ত চিৎকার শুনে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন। দেখেন শরীরের একাধিক অংশই পুড়ে গিয়েছে শ্যামলীর। তড়িঘড়ি তাঁকে উদ্ধার করে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই ভরতি করা হয় তাঁকে। তবে শেষ পর্যন্ত ওই মহিলাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। মঙ্গলবার গভীর রাতে হাসপাতালেই মারা যান শ্যামলী দাস।
[আরও পড়ুন: ‘ঘুঘুর বাসা ভাঙুন’, বাঁকুড়ায় জলের ট্যাঙ্ক ভাঙার ঘটনায় মন্তব্য ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রীর]
এই ঘটনার তদন্ত শুরু করে বরাহনগর থানার পুলিশ। শ্যামলী দাসকে খুনের অভিযোগ ছোট জা সুস্মিতা দাসকে গ্রেপ্তার করা হয়। সেই সময়ে বাড়িতে কেউই ছিলেন না। তবে খুনের ঘটনায় আর কেউ জড়িত কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা বরানগর পুরসভার চেয়ারম্যান অপর্ণা মৌলিক বলেন, “মহিলার মৃত্যু যেভাবে হয়েছে তা খুবই দুঃখজনক ঘটনা। পাড়ার সকলেই ওই পরিবারটির পাশে রয়েছে। আমরাও আছি। পুলিশ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিচ্ছে।”
The post ‘বাঁচাও, বাঁচাও’, জায়ের অত্যাচার থেকে রক্ষা পেতে জ্বলন্ত অবস্থায় দৌড় গৃহবধূর appeared first on Sangbad Pratidin.
