অর্ণব দাস, বারাসত: তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা (Pregnant) মহিলা চিকিৎসা করাচ্ছিলেন দেগঙ্গার এক হাতুড়ে চিকিৎসকের কাছে। অভিযোগ, ওই হাতুড়ে চিকিৎসক মহিলার শারীরিক সমস্যার কথা জানিয়ে তাঁকে গর্ভপাতের পরামর্শ দেন। গর্ভপাত করাতে গিয়েই বিপত্তি। রবিবার সকালে মৃত্যু হল অন্তঃসত্ত্বার। ঘটনাটি জানাজানি হতেই ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গা থানার আমুলিয়া পঞ্চায়েত এলাকায়। উত্তেজিত জনতা চিকিৎসকের ক্লিনিকের বাইরে বিক্ষোভ দেখান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি সামাল দেয়। অভিযুক্ত চিকিৎসককে আটক করে পুলিশ। যদিও ওই চিকিৎসকের দাবি, অন্তঃসত্ত্বা গর্ভপাতের জন্য নয়। পেটের সমস্যার জন্য ওষুধ নিতে ক্লিনিকে এসেছিলেন।
বাদুড়িয়া থানার গোকনার বাসিন্দা রূপালী কাহার। তিনি ৩ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। পরিচিতদের পরামর্শে রূপালী দেগঙ্গার আমুলিয়া পঞ্চায়েতের সন্ধিপুকুর বাজার সংলগ্ন আশরাফ আলি নামে এক হাতুড়ে চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা করান। মূলত অন্তঃসত্ত্বারা সেখানে চিকিৎসা করাতে যান। অভিযোগ, ওই হাতুড়ে চিকিৎসক রূপালীর শারীরিক কিছু সমস্যা আছে বলে জানান। গর্ভপাতের পরামর্শ দেন।
[আরও পড়ুন: যুদ্ধের আবহেও ছাড়েননি দেশ, মায়ের ওষুধ আনতে গিয়ে রুশ গোলায় ছিন্নভিন্ন তরুণী]
রবিবার অন্তঃসত্ত্বার পরিবারের সঙ্গে আশরাফের ক্লিনিকে গর্ভপাত (Abortion) করাতে যান। অভিযোগ, গর্ভপাত করার সময় মৃত্যু হয় ৩ মাসের অন্তঃসত্ত্বার। মৃতার মা সরস্বতী মণ্ডল বলেন, “ওই চিকিৎসক জানিয়েছিলেন গর্ভপাত করাতে। তিনি এটাও বলেছিলেন, আমি ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বার গর্ভপাত করিয়েছি। চিন্তার কোন কারণ নেই। সেই ভরসাতেই চিকিৎসা করাতে গিয়ে মেয়ের মৃত্যু হল।”
মুহূর্তের মধ্যে ঘটনাটি জানাজানি হয়ে যায়। ওই চিকিৎসকের ক্লিনিকের বাইরে জড়ো হন স্থানীয়রা। শুরু হয় তুমুল বিক্ষোভ। খবর পেয়ে দেগঙ্গা থাকার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। অভিযুক্ত চিকিৎসকের কঠোর শাস্তির দাবি করেন গ্রামবাসী। পরিস্থিতি সামাল দিয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। চিকিৎসককে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এবিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা নাসিরউদ্দিন বলেন, “ওই চিকিৎসকের কোনও ডিগ্রি নেই। তা সত্ত্বেও তিনি অন্তঃসত্ত্বাদের চিকিৎসা করতেন। ভুল চিকিৎসা এবং পর্যাপ্ত পরিকাঠামো না থাকার কারণেই অন্তঃসত্ত্বার মৃত্যু হয়েছে। অভিযুক্ত চিকিৎসকের কঠোর শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।” পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মৃতের পরিবারের পক্ষ থেকে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।