অর্ণব আইচ ও অরিজিৎ গুপ্ত: জঙ্গি কার্যকলাপ নিয়ে রীতিমতো বই তৈরি করে তা সোশ্যাল মিডিয়ার সাহায্যে ছড়িয়ে দিচ্ছিল আমিরুদ্দিন আনসারি। দীর্ঘদিন ধরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় এই প্রচার চালাচ্ছিল সে। এই বইয়ের মাধ্যমেই জঙ্গি কার্যকলাপ নিয়ে মানুষের মগজধোলাই করছিল। জঙ্গি সন্দেহে আমিরুদ্দিন আনসারিকে ধরার পর তদন্তে নেমে এমনটাই জানতে পেরেছে রাজ্য পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স বা এসটিএফ।
ধৃতের কাছ থেকে জঙ্গি কার্যকলাপ নিয়ে মোবাইলে ১২ জিবির একটি বই পায় পুলিশ। এই বইটিই সোশ্যাল মিডিয়ার সাহায্যে ছড়িয়ে দিচ্ছিল সে। এই বইতেই জঙ্গি কার্যকলাপ ও দেশবিরোধী নানা কথা রয়েছে। এছাড়া ইতিপূর্বেই ধৃতের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে জেহাদি কাগজপত্র, পেনড্রাইভ, ল্যাপটপ ও মোবাইল ফোন। বাঁকড়ার মুন্সিডাঙার ফ্ল্যাট থেকে একটি জঙ্গি সংগঠনের বইও পাওয়া গিয়েছে।
[আরও পড়ুন: ভালবাসাকেই স্বীকৃতি, সব বাধা পেরিয়ে আদালতেই চার হাত এক হল দম্পতির]
তদন্তে নেমে এসটিএফের আধিকারিকরা জানতে পেরেছেন, কয়েক বছর আগে উত্তরপ্রদেশের দেওবন্দে পড়তে গিয়েছিল আমিরুদ্দিন। সেখানেই কয়েকজন বাংলাদেশির সঙ্গে আলাপ হয়। পুলিশ জানতে পেরেছে ওই ব্যক্তিরাই জঙ্গি কার্যকলাপে আমিরুদ্দিনের মগজধোলাই করে। তখন থেকেই বাংলাদেশের জেএমবির সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়ে। বাঁকড়ার মুন্সিডাঙার ভাড়া নেওয়া ফ্ল্যাট থেকে বাংলাদেশের জেএমবি জঙ্গিদের হয়ে লিংকম্যানের কাজ শুরু করে পুরুলিয়ার বাসিন্দা আমিরুদ্দিন। এমনকি লিংকম্যানের কাজ করতে গিয়ে একবার বাংলাদেশেও ধৃত গিয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। সেই থেকেই ধীরে ধীরে হাওড়ার বাঁকড়ায় বসে জঙ্গি কার্যকলাপ শুরু করে আমিরুদ্দিন।
বৃহস্পতিবারও বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ রাজ্য পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্সের একটি দল বাঁকড়ার মুন্সিডাঙায় আমিরুদ্দিনের ভাড়া নেওয়া ফ্ল্যাটে যায়। এদিনও সেখান থেকে কিছু কাগজপত্র ও মোবাইল সিমের কভার উদ্ধার করে। এসটিএফের আধিকারিকরা ধৃত আমিরুদ্দিন আনসারির ভাড়া বাড়ির ১০০ মিটার দূরে তার এক আত্মীয়ের বাড়ির সন্ধান পায়। সেই আত্মীয়ের বাড়িতেও যায় এসটিএফের সদস্যরা। আত্মীয়দের সঙ্গে কথা বলে আরও কিছু তথ্য জানার উদ্দেশ্য ছিল এসটিএফের। কিন্তু সেই বাড়ির তালা বন্ধ থাকায় আধিকারিকরা ফিরে যান। তবে বাড়িটির ভিডিও তোলেন তাঁরা। এদিন বিকেলে বাঁকড়ায় তদন্তকারী দলটি প্রায় ১৫ মিনিট ছিল। এরপর তারা কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। মঙ্গলবার রাতে গ্রেপ্তারের পর বুধবার সকালে আমিরুদ্দিনকে হাওড়া জেলা আদালতে তোলা হয়। তার ১২ দিনের পুলিশ হেফাজত হয়। ধৃতকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে আরও তথ্য জানার চেষ্টা করছে এসটিএফ।