সৈকত মাইতি, তমলুক: পুরুষ কন্ঠস্বরকে মুহূর্তে মহিলা করে দিচ্ছে অ্যাপ! ফাঁদে পা দিলেই ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে অ্যাকাউন্ট। ম্যাট্রিমনি সাইডে বিয়ের টোপ দিয়ে প্রতারণায় তদন্তে পুলিশ এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ।
জানা গিয়েছে, সম্প্রতি পাঁশকুড়া থানার অন্তর্গত বৃন্দাবনচক এলাকার বাসিন্দা, ধনঞ্জয় পাত্রও ম্যাট্রিমনি সাইটে সুন্দরী বাংলাদেশি নায়িকা শ্রেয়ার (প্রোফাইলের নাম) ছবি দেখে প্রেমে পড়ে যান। বিয়ের প্রস্তাবে রাজি হয়ে যান নায়িকাও। এরপর থেকেই নিয়মিতভাবে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা চাওয়া হচ্ছিল। এদিকে চলছিল প্রেমও। সন্দেহ হওয়ায় পুলিশের দ্বারস্থ হন যুবক। এরপরই তল্লাশি শুরু করেন সাইবার থানার অফিসাররা। রহস্যময়ী 'শ্রেয়া' সত্যিই কোনও নারী নাকি পুরুষ, তার খোঁজ শুরু করেন অফিসাররা। এরপরই জানা যায়, প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে যেকোনও কন্ঠের পরিবর্তন ঘটানো সম্ভব! ফলে ফোনের ওপারে থাকা কন্ঠটি কার? তা নিয়ে রীতিমতো ঘনীভূত হচ্ছে রহস্য। যদিও এ বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার সৌম্যদীপ ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, প্রায় ৪০ লক্ষ টাকার সাইবার প্রতারণার একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।
সূত্রের খবর, বছর দুয়েক আগে রুপসা মুখোপাধ্যায় ওরফে শ্রেয়া নামের একটি ফেক প্রোফাইল বানিয়ে একাধিক যুবকের থেকে লক্ষ লক্ষ টাকার প্রতারণার অভিযোগ উঠেছিল হলদিয়ার এক কলেজ পড়ুয়ার বিরুদ্ধে। সেক্ষেত্রে শ্রীঘরে ঠাঁই হয়েছিল বছর ২৬-এর ওই যুবকের। যদিও পরবর্তী ক্ষেত্রে জামিনে মুক্তি পান তিনি। প্রতারিতদের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, সুন্দরী নায়িকাদের ছবি ব্যবহার করে হলদিয়ার ওই যুবক ম্যাট্রিমোনি সাইটে ৫টি অ্যাকাউন্ট খুলেছিল। আর তাতেই প্রেমে হাবুডুবু খেয়ে বিয়ের প্রস্তাবে রাজি হয়ে যান একাধিক পাত্র। অভিযোগ, ওই যুবকদের সঙ্গেই ফোনে দীর্ঘ সময় ধরে সাবলীলভাবে মহিলা কন্ঠে প্রেমের অভিনয় করে যেত অভিযুক্ত। নিজের একাধিক সমস্যার কথা জানিয়ে টাকা চাইত। এভাবেই প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা প্রতারিত হয়েছিলেন হলদিয়ার খঞ্জনচক এলাকার কৃষানু মহাপাত্র। একইভাবে তমলুকের এক যুবকের থেকেও প্রেমের অভিনয় করে ৭ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। বছর দুয়েকের ব্যবধানে ফের এমন অভিযোগ। এই ঘটনার নেপথ্যেও সেই যুবক কি না, তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।