shono
Advertisement
Amit Shah

পাহাড় সমস্যা মেটাতে 'শাহি' বৈঠকে ব্রাত্য জিটিএ! ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে আদৌ মিলবে সমাধান?

আগামী বছরের গোড়াতেই এই বৈঠকের আয়োজন করতে হবে, সাংসদ রাজু বিস্তাকে নির্দেশ অমিত শাহর।
Published By: Sucheta SenguptaPosted: 08:29 PM Dec 20, 2024Updated: 09:22 PM Dec 20, 2024

অভ্রবরণ চট্টোপাধ্যায়, শিলিগুড়ি: পাহাড় সমস্যার স্থায়ী সমাধানের খোঁজে বারবার বিফলে গিয়েছে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক। নতুন বছরে আবারও নতুন আশা উসকে ফের ত্রিপাক্ষিক বৈঠক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র সরকার। ২০২৫ সালের গোড়াতেই পাহাড়ে এই বৈঠকের আয়োজন করতে সাংসদ রাজু বিস্তাকে নির্দেশ দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তবে তাৎপর্যপূর্ণভাবে জিটিএ-কেই এড়িয়ে বৈঠকের কথা বলেছেন শাহ। তৃণমূল ঘনিষ্ঠতা থাকায় অনীত থাপার দল বিজিপিএম-কেও আমন্ত্রণ না জানানোর নির্দেশ তাঁর। এই পরিস্থিতিতে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক কতটা ফলপ্রসূ হবে, তা নিয়ে ইতিমধ্যে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। শাহর এই সিদ্ধান্তকে 'হাস্যকর' বলে মন্তব্য করেছেন জিটিএ মুখপাত্র শক্তিপ্রসাদ শর্মা।

Advertisement

শুক্রবার এসএসবি-র ৬১ তম প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে শিলিগুড়িতে এসেছিলেন অমিত শাহ। অনুষ্ঠান শেষে তিনি দার্জিলিংয়ের বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তা-সহ দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের সঙ্গে একান্তে বৈঠক করেন। উঠে আসে পাহাড়ের দীর্ঘদিনের সমস্যার কথা। আলাদা রাজ্য বা গোর্খাল্যান্ড বা পাহাড়ের স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধান। সেই প্রসঙ্গে এবার শাহ রাজু বিস্তার উপর দায়িত্ব দিয়েছেন পাহাড়ের ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের। জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহেই এই বৈঠকের আয়োজন করতে বলা হয়েছে।

অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সাংসদ রাজু বিস্তা বলেন, "এদিন সকালেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে পাহাড়ের নানাবিধ বিষয় নিয়ে প্রায় ঘন্টাখানেক ধরে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। ২০২১ সালে তাঁর নির্দেশেই কথা শুরু হয়েছিল স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধান নিয়ে। মাঝে বেশ কিছুটা সময় কেটে গেলেও এবার জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহেই বৈঠকের সিদ্ধান্ত নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আমাকে। ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হবে। পাহাড়-সহ সমতলের জন্য যা ভালো হবে, সেই সিদ্ধান্তই নেওয়া হবে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে। রাজ্য সরকারকে উপস্থিত থাকার জন্য আর্জি জানাব৷ ওরা অংশগ্রহণ করবে কি না, সেটা তাদের বিষয়। কিন্তু আমরা আশা করব, যদি তারা সমাধানের পথে এগোতে যান তাহলে তাদের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের বৈঠকে পাঠাবেন।" তবে অন্যদিকে জিটিএ-র উপস্থিতি নিয়ে বিজেপি সাংসদের সংযোজন, "ভারত সরকার ঠিক করবে বৈঠকে কারা থাকবে। কিন্তু যারা জিটিএ নিয়ে খুশি তারা সেটাই চায়। তাহলে জিটিএ-কে ডাকার কোনও বিষয়ই থাকছে না৷"

অন্যদিকে, ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের আয়োজনের দায়িত্ব রাজু বিস্তাকে দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে রাজ্যের শাসকদল। এ বিষয়ে উত্তরবঙ্গের তৃণমূলের অন্যতম মুখপাত্র গৌতম দেব বলেন, "রাজু বিস্তা ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডাকার কেউ নন। এটা কেন্দ্র, রাজ্য এবং পাহাড়ের ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা বা জিটিএ মিলে এই বৈঠক করবে, সেটাই নিয়ম। অমিত শাহ দলের নেতা হিসেবে রাজু বিস্তাকে কী বলেছেন, তা নিয়ে আমাদের কোনও বক্তব্য নেই। এভাবে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হয় না। এটা রাজনৈতিক কথা বলছেন রাজু বিস্তা।" রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ২০২৬ সালে বিধানসভা নির্বাচন। পাহাড়ের জমি শক্ত রাখতে 'গোর্খাল্যান্ড' ইস্যু হাতিয়ার করতে চায় বিজেপি। আর তার আগে জিটিএ-কে এড়িয়ে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের 'শাহি' চাল যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। 

জিটিএ মুখপাত্র শক্তিপ্রসাদ শর্মার প্রতিক্রিয়া, "জিটিএ-কে ছাড়া কীভাবে ত্রিপাক্ষিক হয়। কী করে তারা এই বৈঠক করবে৷ কেন্দ্র ও রাজ্যের অধীনে থাকা স্থায়ত্বশাসিত সংস্থা জিটিএ। তাকে ছাড়া ত্রিপাক্ষিক বৈঠক সম্ভব নয়।" প্রসঙ্গত, এর আগেও দুবার পাহাড়ে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডাকা হলেও রাজ্য সরকারের প্রতিনিধি তাতে অংশ না নেওয়ায় তা ভেস্তে যায়।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • জিটিএ-কে এড়িয়ে পাহাড়ের স্থায়ী সমস্য়ার সমাধানে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের ডাক অমিত শাহর।
  • আগামী বছরের গোড়াতেই এই বৈঠকের আয়োজন করতে হবে, সাংসদ রাজু বিস্তাকে নির্দেশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর।
  • তবে জিটিএ এবং অনীত থাপার বিজিপিএম-কে বৈঠকে না ডাকার নির্দেশ।
Advertisement