অভ্রবরণ চট্টোপাধ্যায়, শিলিগুড়ি: জ্বলছে বাংলাদেশ। সেই পরিস্থিতিতে বাংলায় সক্রিয় স্লিপার সেল। মডিউল তৈরির চেষ্টা আনসারুল্লা বাংলার। বাংলা থেকে ইতিমধ্যে বাংলাদেশের জঙ্গি সংগঠনটির দুজন গ্রেপ্তার হয়। জেরায় জানা গিয়েছে, তাদের টার্গেটে ছিল শিলিগুড়ি করিডর। জঙ্গি অনুপ্রবেশ রুখতে সতর্ক রাজ্য প্রশাসন। তবে শিলিগুড়ি করিডর নিয়ে এসএসবিতেই আস্থা অমিত শাহের।
শুক্রবার সশস্ত্র সীমা বলের ৬১তম প্রতিষ্ঠা দিবসে শিলিগুড়ি হেডকোয়ার্টারে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। সেখানে দাঁড়িয়েই এসএসবি-র ভূয়সী প্রশংসা করেন শাহ। বলেন, "শিলিগুড়ি করিডর ভৌগোলিকভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শিলিগুড়িতে এসএসবি-র হেডকোয়ার্টার রয়েছে। তাই আমরা অনেকটাই নিশ্চিন্ত। জম্মু-কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদীদের প্রতিরোধে প্রশংসাযোগ্য কাজ করেছে এসএসবি।" বলে রাখা ভালো, নেপাল, ভুটান ও বাংলাদেশ এই তিন দেশের সঙ্গে সীমান্ত ভাগ করে নিয়েছে শিলিগুড়ি করিডর। ভারতের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে উত্তর-পূর্বের সাতটি রাজ্যকে বেঁধে রেখেছে এই সংকীর্ণ স্থলভাগ। যার তুলনা করা চলে মুরগির গলার সঙ্গে। সমরশাস্ত্রের সূত্র মেনে ভারতের মতো মহাশক্তিধর দেশকে দুর্বল করতে এই শিলিগুড়ি করিডরকেই পাখির চোখ করেছে আনসারুল্লা বাংলা টিম।
শাহের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ৩ বছরে ১ হাজার ১০০ অনুপ্রবেশকারীকে গ্রেপ্তার, ১ হাজার একরের বেশি জমি দখলমুক্ত করেছে এসএসবি। এছাড়া ১৮১ জন মানবপাচারকারীকে গ্রেপ্তার করেছে। পাচারের আগে ৮০১ জনকে উদ্ধার করেছে। তাদের মধ্যে নাবালক ও নাবালিকা মিলিয়ে ২৩১ জন। মাওবাদী কার্যকলাপ রুখতেও এসএসবি-র ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন শাহ। তাঁর কথায়, "বিহার ও ঝাড়খণ্ডে মাওবাদী কার্যকলাপ প্রায় বন্ধ করতে পেরেছে এসএসবি। উত্তরাখণ্ডেও ভালো কাজ করেছে তারা। সেখানে কমপক্ষে ১৪ জন মাওবাদী গ্রেপ্তার হয়েছে।"
শাহী তথ্য অনুযায়ী, গোটা দেশজুড়ে মোট ৬০০-র বেশি মাওবাদী ধরা পড়েছে এসএসবি-র জালে। এনকাউন্টার করা হয়েছে ১৫ জন মাওবাদী নেতাকে। উল্লেখ্য, জঙ্গি অনুপ্রবেশ ইস্যুতে বারবার রাজ্য প্রশাসনের উপর দায় ঠেলার চেষ্টা করছে কেন্দ্র সরকার। তবে পালটা রাজ্যের দাবি, সীমান্তের নিরাপত্তায় থাকা বিএসএফ থেকে এসএসবি-সবই শাহী মন্ত্রকের নিয়ন্ত্রণাধীন। তাহলে কী করে দায় এড়াতে পারে কেন্দ্র, উঠছে প্রশ্ন।