shono
Advertisement
Anubrata Mondal

'সব স্তরের প্রতিনিধি নেই', বীরভূমে ১৫ জনের কোর কমিটির পক্ষে সওয়াল অনুব্রতর

কোর কমিটিকে অন্তত ১৫ জনের যাতে করা যায়, তা নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলবেন বলেই জানান অনুব্রত মণ্ডল।
Published By: Sayani SenPosted: 11:58 AM Nov 01, 2024Updated: 02:19 PM Nov 01, 2024

সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: অন্ততপক্ষে ১৫ জনের কোর কমিটি করার কথা বললেন অনুব্রত মণ্ডল। এ ব‌্যাপারে তৃণমূল সুপ্রিমোর সঙ্গে কথাও বলবেন বলে মন্তব‌্য করলেন তিনি। কালীপুজোর দিন দলের কোর কমিটির সদস‌্য সংখ‌্যা নিয়ে পরিকল্পনার কথা জানালেন দলীয় দপ্তরে বসেই। এদিন বোলপুরের দলীয় কার্যালয়ে তাঁর স্পষ্ট কথা, ‘‘যে কোর কমিটি হয়েছে সেটি বোলপুরমুখী হয়েছে। সব জায়গায় সব স্তরের প্রতিনিধি নেই।" কোর কমিটিকে অন্তত ১৫ জনের যাতে করা যায়, তা নিয়ে কালীপুজোর পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলবেন বলেও জানান তিনি। তবে কোর কমিটির আহ্বায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘দলনেত্রী এই কমিটি গড়ে দিয়েছিলেন। তাঁর কাছে দলের ভালোর জন্য যে কেউ প্রস্তাব দিতেই পারেন। দলীয় নেত্রী যা বিবেচনা করবেন, নির্দেশ দেবেন আমরা সেভাবেই চলব।’

Advertisement

উল্লেখ‌্য, দুবছর আগে অনুব্রত মণ্ডলের অনুপস্থিতিতে তাঁকে জেলা সভাপতি রেখেই ৬ জনের কোর কমিটি গঠন করে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথম পর্যায়ে কোর কমিটিতে দুই সাংসদ বীরভূমের শতাব্দী রায় এবং বোলপুরের অসিত মাল থাকলেও লোকসভা নির্বাচনের আগেই তাঁদের বাদ দিয়ে ছয় জনের কোর কমিটি করা হয়। গত পঞ্চায়েত ও লোকসভা নির্বাচনে অনুব্রতকে বাদ দিয়েই ভাল ফল করেছে তৃণমূল। তাই দেখার বিষয় ছিল অনুব্রত জেলায় ফেরার পর কোর কমিটি পরিচালনা অথবা কতটা মাণ‌্যতা দেন। প্রাথমিকভাবে কোর কমিটিকে তেমনভাবে তিনি গুরুত্ব না দিলেও অবজ্ঞাও করেননি। তবে রাজনৈতিকভাবে কৌশলে তিনি কোর কমিটির সঙ্গে কোনও বৈঠকে করেননি। এমনকী তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও কথাও বলেননি। বিজয়া সম্মিলনীর দুয়েকটি সভায থেকে লোকসভা এবং পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভালো ফল করার জন‌্য কোর কমিটিকে ধন‌্যবাদও জানিয়েছিলেন অনুব্রত। কিন্তু কোর কমিটির সদস্যদের অনুপুস্থিতি এবং রাজ্য থেকে ক্রমাগত কোর কমিটিকে নিয়ে বৈঠকে বসার নির্দেশ আসতেই এবার নিজের কৌশলের কথা জানালেন অনুব্রত মণ্ডল।

ছয় সদস্যের কোর কমিটিতে রয়েছেন, বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা, সভাধিপতি কাজল শেখ, বিকাশ রায়চৌধুরি, অভিজিৎ সিংহ ও সুদীপ্ত ঘোষ। মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা, বিকাশ রায়চৌধুরী, সুদীপ্ত ঘোষ- এঁরা সকলেই বোলপুরের বাসিন্দা। সেখানে একমাত্র রামপুরহাটের প্রতিনিধি আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় এবং লাভপুরের প্রতিনিধি বিধায়ক অভিজিৎ সিংহ। যদিও তিনি বোলপুরবাসী। অন্যদিকে সভাধিপতি কাজল শেখ নানুরের বাসিন্দা। ফলে অনুব্রত যে কোর কমিটি প্রসঙ্গে পরিকল্পনার কথা বলছেন তাতে কর্মী সমর্থকদের অনেকেরই সায় আছে বলেই মনে করা হচ্ছে। অনুব্রত বলেন, ‘‘আগে তো ১১ জনের কোর কমিটি ছিল। সেখানে নলহাটির বিধায়ক রাজেন্দ্র সিংহ ছিলেন। অনান্যরা ছিলেন।’’ কিন্তু রাজনৈতিক মহলের বক্তব‌্য, আদতে কোনও দিনই ১১ জনের কোর কমিটি বীরভূমে ছিল না। কিন্তু নলহাটির বিধায়ক-সহ আরও বেশ কয়েকজনকে কোর কমিটিতে আনতে চেয়ে অনুব্রত তাঁর উদ্দেশ্যে বুঝিয়ে দিয়েছেন বলেই ওয়াকবিহাল মহলের ধারণা।

রাজনৈতিক মহলের বক্তব‌্য, বর্তমান যে ৬ জনের কোর কমিটির রয়েছে, তার বেশিরভাগ সদস্যের উপর অনুব্রতের নিয়ন্ত্রণে নেই। তাই দলে তাঁর প্রভাব সেই আগের মতো থাকবে কিনা তা নিয়ে ধন্দে রয়েচেন কেষ্ট। তাই প্রকারন্তরে জেলার সর্বত্র প্রতিনিধি রাখার নাম করে নিজের অনুগামীদের কোর কমিটিতে আনতে চাইছেন তিনি। কোর কমিটি ‘বোলপুরমুখী’অননুব্রতর এই অভিযোগ প্রসঙ্গে দলের অন্দরে অনেকের বক্তব‌্য, ক্ষমতায় আসার পর দল পরিচালনার থেকে জেলায় গোটা দল বোলপুরের দিকেই তাকিয়ে বসেছিল। বোলপুরমুখী করেই এতদিন অনুব্রত মণ্ডল দল পরিচালনা করেছেন। এখনও পর্যন্ত দলের বিভিন্ন স্তরে শীর্ষে বোলপুরই। দলের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা। কোর কমিটির আহ্বায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী। প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি প্রলয় নায়েক। এমনকী আইএনটিটিইউসি প্রাক্তন সভাপতিও তিনিও ছিলেন বোলপুরের। সেক্ষেত্রে দীর্ঘদিন অনুব্রত মণ্ডলের পরিচালনায় দল পরিচালনা হওয়ার সময় বোলপুরের প্রতি এই অভিযোগ উঠলেও তিনি তা খারিজ করে দিয়েছিলেন। তাহলে এখন কেন তিনি এই কোর কমিটি বাড়িয়ে অন্তত ১৫ জনের করার কথা পরিকল্পনা বলছেন সেটা ভবিষ্যত বলবে। তবে কালীপুজের দিন থেকেই অনুব্রত জেলায় আগের মতো একচ্ছত্র প্রভাব বিস্তার করতে শুরু করলেন বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • বীরভূমে ১৫ জনের কোর কমিটির পক্ষে সওয়াল অনুব্রতর।
  • সব স্তরের প্রতিনিধি নেই, দাবি অনুব্রত মণ্ডলের।
  • কোর কমিটিকে অন্তত ১৫ জনের যাতে করা যায়, তা নিয়ে কালীপুজোর পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলবেন বলেও জানান তিনি।
Advertisement