shono
Advertisement
Siliguri

বদ্ধ ঘরে উদ্ধার মা-ছেলের মৃতদেহ, হাসপাতালে বাবা ও মেয়ে! চাঞ্চল্য শিলিগুড়িতে

স্ত্রী, ছেলের মৃত্যুর খবর শুনে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি বাড়ির কর্তা। তদন্তে নেমেছে পুলিশ।
Published By: Sucheta SenguptaPosted: 07:45 PM Jan 02, 2025Updated: 07:48 PM Jan 02, 2025

অভ্রবরণ চট্টোপাধ্যায়, শিলিগুড়ি: বদ্ধ ঘর থেকে উদ্ধার মা ও ছেলের মৃতদেহ। অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে রয়েছে মেয়ে। বৃহস্পতিবারের এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়াল শিলিগুড়ির উত্তরায়ণ টাউনশিপে। জানা গিয়েছে, মৃতদের নাম তিথি দাস ও তেজাস দাস। তাঁরা সম্পর্কে মা ও ছেলে। মায়ের বয়স ৩৮ বছর, ছেলেটি ৮ বছরের। আশঙ্কাজনক অবস্থায় মাটিগাড়ার এক নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন তিথিদেবীর ১৮ বছরের মেয়ে তেজল দাস। এদিকে, গোটা ঘটনার খবর পেয়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে নার্সিংহোমে ভর্তি স্বামী সুজিত দাস। প্রাথমিকভাবে পুলিশ জানতে পারে, ঘরে আগুন জ্বালিয়ে তাপ নিতে গিয়ে শ্বাসকষ্ট হয়ে তাঁদের মৃত্যু হয়েছে। তবে অন্যান্য দিক খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে খবর, স্বামী সুজিত দাস ঠিকাদারি করেন। নিজের কাজে তিনি বাইরে ছিলেন। ইংরাজি নববর্ষে কারণে রাতে বাইরে থেকে খাবার অর্ডার করে খেয়েছিলেন মা তিথি দাস, মেয়ে তেজাল ও ছেলে তেজাস। তাঁদের সঙ্গে থাকা ভাগ্নে তন্ময় সরকার। এরপর খাওয়া-দাওয়া করে ঘর গরম রাখতে একটি পাত্রে কয়লা-সহ হিটার জ্বালিয়ে ঘুমোয় মা, মেয়ে ও ছেলে। আর অন্য ঘরে ভাগ্নে তন্ময় সরকার। সকালের দিকে তেজালের ঘুম ভাঙলে সে কোনওরকমে দরজা খুলে তন্ময়কে জানায়, তার মা ও ভাই ঘুম থেকে উঠছে না। একথা বলার পর সে নিজেও অজ্ঞান হয়ে যায়।

এই বাড়িতেই উদ্ধার হয়েছে মা-ছেলের দেহ। নিজস্ব ছবি।

এই অবস্থায় তন্ময় ভেতরে ঢুকে দেখেন, ধোঁয়ায় ঢাকা ঘর। তার মধ্যে বিছানায় পড়ে রয়েছে ৮ বছরের তেজাস, বাথরুমের কাছে পড়ে রয়েছেন তিথি। তন্ময় সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে খবর দেন। এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই শোরগোল শুরু হয় গোটা টাউনশিপে। ছুটে আসেন প্রতিবেশীরা। তাঁরাই মা-ছেলেকে উদ্ধার করে মাটিগাড়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু নার্সিংহোমে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা তিথি ও তেজালকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় উত্তরায়ন টাউনশিপ ফাঁড়ির পুলিশ।

অন্যদিকে, মৃত তিথি দাসের স্বামী সুজিত দাস ঘটনাস্থলে পৌঁছে ছেলে ও তাঁর স্ত্রীর মৃত্যুর খবর শুনে হৃদরোগে আক্রান্ত হন। বর্তমানে তিনিও চিকিৎসাধীন। তবে কীভাবে তিথি-তেজালের মৃত্যু হল, তা এখন পর্যন্ত স্পষ্ট নয়। এই ঘটনায় বাড়ির পরিচারিকা সুমতি মুন্ডা বলেন, "রাতে খেয়েদেয়ে শুয়েছে সবাই। মাঝেমাঝে ঠান্ডার কারণে ঘর গরম করতে ঘরে কয়লা জ্বালাতেন ওঁরা। বুধবারও তাই জ্বালিয়েছিলেন। কিন্তু ম্যাম মনে হয় ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। যে কারণে কয়লা বের করতে ভুলে যান। ঘরে গ্যাস ভরে যাওয়ার কারণেই মৃত্যু হয়েছে বলে শুনছি।"

ঘরে আগুন জ্বালিয়ে ঘুমিয়ে পড়ায় এই দুর্ঘটনা বলে প্রাথমিক অনুমান। নিজস্ব চিত্র।

পুলিশেরও প্রাথমিক অনুমান তেমনটাই। ঠান্ডার কারণে ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ ছিল। তাই কয়লার ধোঁয়া থেকেই শ্বাসকষ্টের জেরে মৃত্যু হতে পারে। যদিও গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। এ বিষয়ে ডিসিপি বিশ্বচাঁদ ঠাকুর বলেন, "ময়নাতদন্তের পরেই আসল কারণ জানা যাবে। শ্বাসকষ্টে মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিক অনুমান কিন্তু আরও অন্য কোনও কারণ আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে।"

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • শিলিগুড়িতে ঘরের মধ্যে উদ্ধার মা-ছেলে, মেয়ে ভর্তি হাসপাতালে।
  • স্ত্রী, ছেলের মৃত্যুর খবর পেয়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হন বাড়ির কর্তা।
  • ঘরে আগুন জ্বালিয়ে ঘুমিয়ে পড়ায় এই দুর্ঘটনা বলে প্রাথমিক অনুমান।
Advertisement