মনিরুল ইসলাম, উলুবেড়িয়া: চোখের সামনে দাউদাউ আগুনে পুড়ে মারা গেলেন চারজন। আগুন নেভানোর চেষ্টা করলেও ভিতরে ঢুকতে পারা যায়নি। ঘটনার পর থেকেও ভেঙে পড়েছেন এলাকার প্রতিবেশী থেকে আত্মীয়রা। আগুনে পুড়ে মারা গিয়েছেন ৭৫ বছর বয়সী দুর্যোধন দলুই। তিনি একটি ঘরে ছিলেন। আর একটি ঘরে ছিলেন দুর্যোধনের ছেলে বছর ৪২-এর দুধকুমার দলুই, পুত্রবধূ অর্চনা দলুই ও বছর ১৪-এর নাতনি শম্পা।
রবিবার রাত ১২টার পর ওই বাড়িতে আগুন লেগেছিল বলে খবর। দুধকুমারের জ্যাঠতুতো দাদার বাড়ি ওই বাড়ি থেকে প্রায় ১০০ ফুট দূরে। রাতে শৌচকার্য করার জন্য তিনি বাইরে বেরিয়েছিলেন। তখনই ওই আগুন দেখে আশপাশের মানুষজনকে খবর দেন। গতকাল গঙ্গাপুজো উপলক্ষে রাতে সাঁওড়িয়া বিশালক্ষীতলায় একটি অনুষ্ঠান ছিল। সেই অনুষ্ঠান দেখতে গ্রামের বেশিরভাগ লোকই সেখানে ছিলেন। হাতে গোনা কিছু মানুষই নিজেদের বাড়িতে ছিলেন। আগুন নেভাতে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন সকলে। স্থানীয়রা প্রথমে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেছিলেন। দমকল ও পুলিশকেও খবর দেওয়া হয়।
দমকল কর্মীরা অকুস্থলে গিয়ে বেশ কয়েক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নেভান। জানা গিয়েছে, ওই বাড়িতে দুই ঘর ছিল। একটি ঘরে দুধকুমারের বাবা ঘুমিয়ে ছিলেন। অন্য ঘরে ছিলেন দুধকুমার, তাঁর স্ত্রী এবং মেয়ে। আগুন নেভার পর পুলিশ ও দমকম কর্মীরা ওই পুড়ে যাওয়া বাড়ির ভিতরে ঢোকেন। দেখা যায়, আগুনে ঝলসে মৃতদেহগুলি কার্যত দলা পাকিয়ে গিয়েছে। কোনটি কার মৃতদেহ বোঝারও উপায় নেই। মৃতদেহগুলি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। মৃতদেহগুলির পরিচয় জানার চেষ্টার জন্য ডিএনএ পরীক্ষা করা হতে পারে। সেই সম্ভাবনার কথাও উঠে আসছে। দুধকুমারের ছেলে ওড়িশায় কর্মরত। তাঁকে এই দুঃসংবাদ দেওয়া হয়েছে। পরিবারের সকলে মারা গিয়েছেন, সেই কথা শুনে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন তিনি। বাড়ি ফেরার জন্য ওড়িশায় ওই যুবক রওনা হয়েছেন। প্রতিবেশীরাও ঘটনায় শোকাতুর। আত্মীয়রা কান্নায় ভেঙে পড়েছেন।
কীভাবে ওই আগুন লাগল? সেই বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পুলিশ। শর্টসার্কিট থেকে ওই আগুন লেগে থাকতে পারে। প্রাথমিকভাবে এই অনুমান করা হচ্ছে। এদিন সকালেও পুড়ে যাওয়া ওই বাড়ির বিভিন্ন জায়গা থেকে ধোঁয়া উঠতে দেখা গিয়েছে। ফরেনসিক দল ঘটনাস্থলে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করবেন বলে খবর। ঘটনাস্থলে যান আমতার বিধায়ক সুকান্ত পাল।
