জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মতুয়াগড় গাইঘাটার ঠাকুরনগরে এসআইআর বিরোধী পদযাত্রা করেন। সেই পদযাত্রার পাল্টা ঠাকুরনগরে প্রতিবাদ পরিবর্তন সংকল্প যাত্রার ডাক দেয় বিজেপি। এই যাত্রায়, অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী এবং রাজ্য সভাপতি শমিক ভট্টাচার্য আসছেন বলে লাগাতার প্রচার চালায় বনগাঁ জেলা বিজেপি। রাস্তার তোরণেও ছিল মিঠুন চক্রবর্তীর ছবি। যদিও, কার্যক্ষেত্রে দেখা গেল, এই যাত্রায় নেই মিঠুন।
যাত্রায় মিঠুন চক্রবর্তী না আসায় শুরুতেই ফাঁকা হয়ে গেল ভিড়। মিঠুনকে না দেখতে পেয়ে হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরলেন অনেকেই। পদযাত্রা ঠাকুরনগর স্টেশনের দিকে এগোতেই দেখা গেল উল্টোদিকে বহু মানুষ মিছিল ভেঙে রওনা দিয়েছেন বাড়ির দিকে। গাইঘাটা, সুটিয়া, বাগদার বহু মানুষ মিছিলে না হেঁটে, ঠাকুরবাড়িতে প্রণাম করেই বাড়ি ফিরলেন ৷ তাঁদের বক্তব্য, "মিঠুন চক্রবর্তী আসবেন শুনেছিলাম ৷ মিঠুন স্টার। তাঁকে দেখতেই আজকে এসেছিলাম। শুনলাম উনি অসুস্থ, তাই আসেননি।" তাঁদের অভিযোগ, "এটা আমাদের জেলা নেতারা জানতেন। মিথ্যাচার করে নিজেদেরই মুখ পোড়ালেন।" বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার বিজেপি সভাপতি বিকাশ ঘোষ বলেন, মিঠুন চক্রবর্তী অসুস্থ। সেই কারণে আসতে পারেননি।" যদিও একাংশ তা মানতে নারাজ। তাঁদের বক্তব্য, মিঠুন চক্রবর্তী আসার কোনও কথাই ছিল না।
বিজেপির পরিবর্তন সংকল্প যাত্রা উপলক্ষে ঠাকুরনগর হাসপাতাল রোড থেকে রেলবাজার পর্যন্ত প্রচুর তোরণ লাগানো হয়। সেখানে, শান্তনু ঠাকুর, শমিক ভট্টাচার্যের ছবি থাকলেও গাইঘাটার বিজেপি বিধারক সুব্রত ঠাকুরের ছবি দেখা দেখা যায়নি। এনিয়ে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বেরও অভিযোগ ওঠে। সারা ভারত মতুয়া মহাসংঘের সম্পাদক সুকেশ বিশ্বাস বলেন, "এটা ওদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব যা প্রকাশ্যে চলে এসেছে।" সুব্রত ঠাকুরের দাবি, "আমার ছবি নেই তাতে আমি কিছু মনে করিনি ৷ পরিবর্তন সংকল্প যাত্রায় রাজ্য সভাপতি যাবেন।"
এদিন বেলা তিনটে পদযাত্রা সময় থাকলেও তা প্রায় ঘন্টাখানেক দেরিতে শুরু হয়। পদযাত্রা যায় ঠাকুরনগর স্টেশন পর্যন্ত সেখানে একটি ছোট অস্থায়ী মঞ্চে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর এবং বিজেপির রাজ্য সভাপতি শমিক ভট্টাচার্য। মিছিল হাঁটেন গাইঘাটার বিধায়ক সুব্রত ঠাকুর, বনগাঁ দক্ষিণের বিধায়ক স্বপন মজুমদার, উত্তরের বিধায়ক অশোক কীর্তনীয়া, কল্যাণীর বিধায়ক অম্বিকা রায়-সহ একাধিক জেলা নেতৃত্ব ৷
পদযাত্রা শেষে, ঠাকুরবাড়ির মন্দির এসে পুজো না দিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি কলকাতা ফিরে যান। এতেই প্রশ্ন তুলেছেন মতুয়াদের একাংশ। তাঁদের দাবি, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঠাকুর বাড়িতে না আসায় সমালোচনার ঝড় তোলেন বিজেপি নেতারা। এবার বিজেপি রাজ্য সভাপতিও ঠাকুরবাড়িতে এলেন না ৷ শমিক ভট্টাচার্য বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বড়মা বীণাপাণি দেবীকে কথা দিয়ে গিয়েছিলেন মতুয়াদের সিএএ এর মাধ্যমে নাগরিকত্ব দেবেন প্রধানমন্ত্রী কথা রেখেছেন সেই স্বপ্ন পূরণ করেছেন। মতুয়াদের উদ্দেশ্যে তাঁর আহ্বান, "আপনারা বিএলও-দের সহযোগিতা করুন।"
