দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: শ্বশুরবাড়ির লোকজন গাঁজা বিক্রির সঙ্গে জড়িয়ে। নিত্যদিন বাড়িতে অচেনা লোকজন হাজির হত। সেই নিয়ে ক্ষোভ জানানোই কাল! ওই বধূকে বেধড়ক মারধর করা হল। শুধু তাই নয়, তাঁর শরীরে ইলেকট্রিক শক পর্যন্ত দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। ন্যক্কারজনক ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জীবনতলা এলাকায়। ওই বধূকে উদ্ধার করতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছেন তাঁর বাপেরবাড়ির লোকজনও। আক্রান্ত বধূ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে খবর, জীবনতলা থানার আঠারোবাঁকি পঞ্চায়েতের দাহারানি গ্রামের সাইফুল সর্দারের সঙ্গে গত কয়েক মাস আগে বিয়ে হয় বাসন্তী থানার কাঁঠালবেড়িয়া পঞ্চায়েতের কলতলার কারিমার। অভিযোগ, কারিমার শ্বশুর খয়রুল, শাশুড়ি মেহেরুন ও স্বামী সাইফুল বেআইনি গাঁজার ব্যবসা করে। প্রতিদিনই বাড়িতে বহিরাগতদের আনাগোনা। বিয়ের পর বধূ কারিমা এসবের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সরব হয়ে ওঠেন। প্রতিবাদ করলেই প্রতিনিয়ত অত্যাচারের সম্মুখীন হতে হত কারিমাকে। শ্বশুর, শাশুড়ি ও স্বামী বেধড়ক মারধর ও শারীরিক নির্যাতন করত বলে অভিযোগ।
বুধবার সেই নির্যাতন সব কিছুকে ছাপিয়ে গেল। সেদিনও বাড়িতে ফের বহিরাগতদের আনাগোনা চলতে থাকে। ফের প্রতিবাদ করেন ওই বধূ। অভিযোগ, প্রতিবাদ করতেই বধূর শ্বশুর, শাশুড়ি ও স্বামী মারমুখী হয়ে ওঠে। লাঠি, বাঁশ দিয়ে তাঁকে বেধড়ক মারধর চলে। কেবল মারধর করেই ক্ষান্ত হয়নি শ্বশুরবাড়ির লোকজন। অভিযোগ, স্বামী সাইফুল তাঁর গলা টিপে মেরে ফেলার চেষ্টা করে। পাশাপাশি, ওই বধূর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ইলেকট্রিক শক দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। সারা শরীরে যন্ত্রণায় ওই বধূ কাতরাতে থাকেন।
মেয়েকে মারধরের ঘটনার কথা জানতে পেরে জীবনতলার ওই বাড়িতে পৌঁছন তাঁর বাপেরবাড়ির লোকজন। তাঁদেরও লাঠি বাঁশ দিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। সেই অবস্থাতেও মেয়েকে উদ্ধার করে নিয়ে যান বাপেরবাড়ির আক্রান্তরা। রাতেই ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করানো হয়। তাঁর শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক। জীবনতলা থানায় শ্বশুরবাড়ির লোকদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। অভিযুক্তদের খোঁজে চলছে তল্লাশি। ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।