শেখর চন্দ্র, আসানসোল: লটারি কাণ্ডের তদন্তে তৎপর সিবিআই। এবার অনুব্রত মণ্ডলকে জেরা করতে আসানসোল বিশেষ সংশোধনাগারে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা। শনিবার সকালে চারজন সিবিআই আধিকারিক জেলে যান। বর্তমানে চলছে জিজ্ঞাসাবাদ।
আগস্ট মাসে গরু পাচার মামলায় বোলপুরের নিচুপট্টির বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার হন অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mandal)। তারপর থেকে আসানসোল বিশেষ সংশোধনাগারেই রয়েছেন তিনি। একটানা প্রায় ৮৫ দিনেরও বেশি সময় ধরে সংশোধনাগারে রয়েছেন অনুব্রত। শনিবার বেলা ১১টা ৫৫ মিনিট নাগাদ অনুব্রত মণ্ডলকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে আসানসোল বিশেষ সংশোধনাগারে যান চারজন সিবিআই আধিকারিকরা। গরু পাচার মামলার তদন্তকারী আধিকারিক সুশান্ত ভট্টাচার্য-সহ চার প্রতিনিধি দল সংশোধনাগারে ঢোকেন। জেরা শুরু করেন তাঁরা। সূত্রের খবর, লটারির রহস্যভেদ করতে জেলে যান আধিকারিকরা।
[আরও পড়ুন: সল্টলেকের গেস্ট হাউসে যুবক খুনে গ্রেপ্তার বান্ধবী ও নতুন ‘প্রেমিক’, রহস্যের জট খোলার আশা]
উল্লেখ্য, চলতি বছরের জানুয়ারিতে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে একটি ছবি। সেখানে দেখা যায়, লটারিতে ১ কোটি টাকা জিতেছেন অনুব্রত মণ্ডল। প্রথমে এবিষয়ে অনুব্রত মুখ খুলতে চাননি। পরে জানান, দলের কাজে গাড়িতে ঘুরতে ঘুরতে একদিন গাড়ি চালক-নিরাপত্তারক্ষীর কাছে অনুব্রত শোনেন যে, তাঁরা সকলেই কমবেশি লটারির টিকিট কেনেন। সেই সময়ই অনুব্রত মজার ছলে তাঁদের বলেছিলেন, তাঁর জন্য টিকিট কিনতে। সেই মতোই তাঁরা টিকিট কেনে। কিন্তু সেটি ছিল নিরাপত্তারক্ষীদের কাছে। সেই কোটি টাকা প্রাপ্তিই এখন সিবিআইদের ভাবাচ্ছে।
তদন্তে উঠে এসেছে, একটি এজেন্সির মাধ্যমে লটারির টিকিট কাটা হয়েছিল। এদিকে টাকা দিয়েছিল অন্য একটি এজেন্সি। আর সেখানেই দানা বেঁধেছে ধোঁয়াশা। মনে করা হচ্ছে, এভাবেই গরু পাচারের কালো টাকা লটারির মাধ্যমে সাদা করা হয়েছিল। সিবিআই সূত্রে খবর, অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mandal) নামে লটারির টিকিটটি কেনা হয়েছিল বোলপুরের একটি এজেন্সি থেকে। সেই এজেন্সির মালিক শেখ রাহুল। এবং লটারিটি ভাঙানো হয়েছিল গাঙ্গুলি এজেন্সি থেকে। ওই এজেন্সির মালিক বাপি গঙ্গোপাধ্যায়কে ইতিমধ্যেই নিজাম প্যালেসে ডেকে পাঠানো হয়। তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়, ওই টিকিটটি অনুব্রত মণ্ডল নিজে নাকি তাঁর কোনও আত্মীয় বা কর্মীর মাধ্যমে কিনেছিলেন। যদিও সিবিআই ক্যাম্প থেকে বেরনোর পর কার্যত বোমা ফাটান লটারি বিক্রেতা। ওই লটারি বিক্রেতা প্রথমে বলেন, তিনি কাকে লটারি বিক্রি করেছেন তা মনে নেই। পরে আবার তিনি বলেন, “না, আমি অনুব্রত মণ্ডলকে কোনও লটারির টিকিট বিক্রি করিনি।”