শংকরকুমার রায়, রায়গঞ্জ: বুধবার ভারতের ঘড়িতে তখন সন্ধ্যা ৬টা বেজে ৪ মিনিট। চাঁদের মাটি স্পর্শ করল ভারতের চন্দ্রযান ৩। আর এই ঐতিহাসিক মুহুর্ত অন্যতম অংশীদার হয়ে সারাজীবনের জন্য নিজের নাম পাকা করে নিলেন উত্তর দিনাজপুরের কৃতী বৈজ্ঞানিক অনুজ নন্দী।
ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো সূত্রে জানা গিয়েছে, চন্দ্রযান ৩-এর ল্যান্ডার ‘বিক্রম’কে প্রায় ৪০ দিন ধরে বয়ে নিয়ে গিয়েছে ‘প্রোপালশন মডিউল পে-লোড’। তার গায়ে থাকা একটি ‘ক্যামেরা’ তৈরি করার দায়িত্বে ছিলেন উত্তর দিনাজপুরে ইসলামপুরের ফার্ম কলোনির বাসিন্দা ৪৯ বছর বয়সী অনুজ নন্দী।
এদিন সন্ধেয় চন্দ্রযান ৩-এর সফল পদার্পনের সেই মাহেন্দ্রক্ষণটি ইসলামপুরের বাড়িতে বসে দেখলেন বৈজ্ঞানিক অনুজের মা শোভারাণী নন্দী-সহ পরিবারের সদস্যরা। ছেলের অসামান্য সাফল্যে উচ্ছ্বসিত অসুস্থ মা। তিনি এদিন বলেন,”আমি সন্তুষ্ট। আমি এতদিন শুধু ঠাকুরকে ডেকেছি। আজ ঠাকুর যেন আমার কথা শুনেছেন।” শোভারাণীদেবী আরও বলেন, “গত ১৪ জুলাই চন্দ্রাযান ৩ উৎক্ষেপণের পর ফোনে কথা হয়েছে। কিন্তু আজ ছেলে বউমার সঙ্গে কথা বলেছি।”
অনুজ নন্দী এখন শুধু একটি নাম নয়। মহাকাশ গবেষণার সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে মিশে গেলেন আজ। ইসলামপুর হাই স্কুল থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থ বিজ্ঞানে স্নাতক হন। তারপর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রথম শ্রেণি স্নাতকোত্তর উত্তীর্ণ হন। তারপর এম টেক এবং পিএইচডি সম্পূর্ণ করেন। এই সপ্রতিভ মেধাবী ছাত্রের ভুবনজোড়া সাফল্যে তাঁর রায়গঞ্জ ইউনিভার্সিটি কলেজের পদার্থ বিজ্ঞানের প্রাক্তন অধ্যাপক অশোক ঘোষও গর্বিত। বলেন,”শিক্ষকতা পেশা সার্থক। একসময় আমার বাড়িতে এসে অনুজ পড়াশোনা করত।” অন্যদিকে রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের নয়া উপাচার্য দীপককুমার রায় বলেন, “ক্যাম্পাসে জায়েন্ট স্ক্রিনে চন্দ্রাযান চাঁদের মাটি স্পর্শ দেখলাম,আর সেই কৃতিত্বে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র যুক্ত,তা ভাবতেই আলোড়িত হচ্ছে মন।”
