স্টাফ রিপোর্টার: একটি প্রশাসনিক ও একটি রাজনৈতিক, দুটি কর্মসূচি নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার একদিনের নদিয়া সফরে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দুপুরে কৃষ্ণনগর পৌঁছে হেলিপ্যাডে প্রথমে সরকারি অনুষ্ঠান, পরে রয়েছে তাঁর রাজনৈতিক সভা। এদিন সরকারি অনুষ্ঠান থেকে রাজ্যে রাস্তা নির্মাণে মেগা-প্রকল্পের সূচনা করতে চলেছেন মমতা। গ্রামীণ ও শহরকেন্দ্রিক, সব মিলিয়ে ২০ হাজার কিলোমিটারেরও বেশি রাস্তা তৈরি করবে রাজ্য সরকার। রাজ্যের কোষাগার থেকে খরচ হতে চলেছে প্রায় ৮৪৮৭ কোটি টাকা।
সম্প্রতি সড়ক পরিকাঠামোয় আরও জোর দিতে রাজ্যজুড়ে রাস্তা তৈরির কাজে সিলমোহর দিয়েছিল মন্ত্রিসভা। এর পরই 'পথশ্রী' ও 'রাস্তাশ্রী' প্রকল্পে রাস্তা নির্মাণে গতি আনতে একেবারে আলাদা করে টেন্ডার করার নয়া পোর্টালও খোলে রাজ্য। বছর ঘুরলেই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগেই জোরকদমে কাজ শুরু করে দিল রাজ্য। নবান্ন সূত্রে খবর, পথশ্রী ও রাস্তাশ্রী প্রকল্পের চতুর্থ পর্বে ২০,৪৭৯টি রাস্তা হবে। যার দৈর্ঘ্য প্রায় ২০ হাজার ৩০ কিলোমিটার। এর মধ্যে সব চেয়ে বড় অংশ পঞ্চায়েত দপ্তরের অধীনে। অর্থাৎ গ্রামীণ ক্ষেত্রে ৯,১১৪টি রাস্তা গড়া হবে। সব মিলিয়ে রাস্তার দৈর্ঘ্য হবে প্রায় ১৫,০১১ কিলোমিটার। খরচ হবে প্রায় ৬,৯৮৭কোটি টাকা। এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে শহরাঞ্চলের রাস্তা তৈরির কাজও। কেএমডিএ-এর অধীনে তৈরি হবে ১১,৩৬৫টি রাস্তা। দৈর্ঘ্যের হিসাবে প্রায় ৫,০১৯ কিলোমিটার। ব্যয় ধরা হয়েছে ১,৫০০ কোটি টাকা। কাজ শুরু হয়ে যাবে জানুয়ারি মাস থেকে।
সরকারি অনুষ্ঠানের পর রয়েছে রাজনৈতিক সমাবেশ। ইতিমধ্যেই এসআইআরের বিরুদ্ধে জেলায় জেলায় রাজনৈতিক সমাবেশ চলছে মমতার। বনগাঁ থেকে শুরু হয়েছে এই 'পাশে থাকা'র সফর। তার পর তিনি গিয়েছেন মালদহ, বহরমপুর এবং কোচবিহারে। সর্বত্রই মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, "ভোট চাইতে আমি আসিনি। এসেছি আপনাদের পাশে দাঁড়াতে। সবাইকে বলতে চাই ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ দিয়ে ওরা সবাইকে তাড়িয়ে দিতে চাইছে। কিন্তু আমরা তা হতে দেব না। কোনও ডিটেনশন ক্যাম্প আমি থাকতে বাংলায় হবে না। কাউকে পুশব্যাকও করতে দেব না। সবাই নিশ্চিন্ত থাকুন, ভয় পাবেন না আমি আছি।” নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে সরব মমতা আরও বলেছেন, "তিন বছরের কাজ দু'মাসে হয় না। তড়িঘড়ি কেন এসআইআর? কাকে সুবিধা করে দিতে? এটা একটা ষড়যন্ত্র। আমরা জানতে পেরেছিলাম, এসআইআর না মানলে বাংলায় রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করে সরকার ফেলে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল।" বস্তুত, এসআইআরে সব চেয়ে চিন্তায় রয়েছেন মতুয়া, রাজবংশীরা। সেই জন্যই তৃণমূল নেত্রী সফর করেছেন বনগাঁ থেকে কোচবিহার। সংখ্যালঘুদের আশ্বস্ত করতে তিনি গিয়েছিলেন মালদহ-মুর্শিদাবাদে। নদিয়াতেও প্রচুর মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষ বাস করেন। আবার একাংশে সংখ্যালঘুদের বাস। বৃহস্পতিবারের সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের ফের পাশে থাকার বার্তা দেবেন বলেই মনে করা হচ্ছে।
