নিরুফা খাতুন: শীত পড়তেই রয়্যাল বেঙ্গল দর্শনে সুন্দরবনে পর্যটকদের ঢল। ব্যাঘ্র দর্শনের আশায় ভিড় করছে পর্যটক থেকে ওয়াইল্ড লাইফ ফোটোগ্রাফারের দল। কিন্তু বনদপ্তর তাতে উদ্বিগ্ন, শঙ্কিত। কেননা, প্রাণ বিপন্ন হওয়ার ঝুঁকি নিয়েও গভীর জঙ্গলে ঢুকে পড়ছে পর্যটকদের বোট! অনেক ক্ষেত্রে বিপদ হতে পারে জেনেও নিষিদ্ধ খালগুলিতে চলে যাচ্ছেন বোট চালকরা। বিশেষ করে ওয়াইল্ডলাইফ পর্যটক বোটগুলির উপদ্রবে ঘুম কেড়েছে বনদপ্তরের। জঙ্গলের নিয়ম ভাঙার অপরাধে জরিমানা করেও হুঁশ ফেরানো যাচ্ছে না বোট চালকদের।
পশুজগতে সিংহকে রাজার আসন দেওয়া হলেও সুন্দরবনের ক্ষেত্রে এই রীতি খাটে না। সুন্দরবনের আকর্ষণের কেন্দ্রে শুধুই দক্ষিণরায়। তার আকর্ষণে সারা বছরই সুন্দরবনে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আনাগোনা লেগে থাকে। শীতকালে তা বেড়ে যায়। কেননা গহীন ম্যানগ্রোভ অরণ্য থেকে দক্ষিণ রায়রা সব সময় বেরয় না, শীতের মরশুমে তাদের দেখা মেলে। কিন্তু রয়্যাল বেঙ্গলের প্রতি এই টান অধিকাংশ সময়ই বেপরোয়া, বাঁধনছাড়া হয়ে যাচ্ছে। বনদপ্তর সূত্রে খবর, বাঘ দর্শনের আশায় বোটগুলি ঝুঁকি নিয়ে জঙ্গলের পাড়ে তুলে দিচ্ছে চালকরা। সেখানে দীর্ঘক্ষণ বোট দাঁড় করিয়ে রাখা হচ্ছে।
সম্প্রতি সুন্দরবনে বাঘের থেকে কয়েক ফুট দূরত্বে পর্যটকবোঝাই বোট দাঁড়িয়ে থাকার ছবি ভাইরাল রয়েছে। সুন্দরবন ব্যাঘ্র সংরক্ষণ কেন্দ্রের এক আধিকারিক জানান, ওয়াইল্ডলাইফ টুরিস্ট বোটগুলি অ্যাডভেঞ্চারের নেশায় জঙ্গলের নিয়মনীতি মানছে না। এজন্য নিয়ম ভাঙা বেশ কিছু বোটকে দশ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। বোটের গাইডদেরও শাস্তি দেওয়া হয়েছে এক সপ্তাহের জন্য সাসপেন্ড করে।
সুন্দরবনের নিষিদ্ধ এলাকায় পর্যটকদের বোট
পালটা বনকর্মীদের হুমকি দিচ্ছেন বোট মালিকরা। অনেক বনকর্মী আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন। সুন্দরবন ব্যাঘ্র সংরক্ষণ কেন্দ্র প্রতিদিনই ১২০-১৩০টির মতো পর্যটক বোটকে অনুমতি দেয়। জঙ্গলের কোর এলাকা ছাড়া কিছু খালেও পর্যটকদের বোটের প্রবেশ নিষিদ্ধ রয়েছে। যেমন ধনার খাল, দাহারানি খাল, লেবুখালি খাল। কিন্তু অনেক বোট পর্যটকদের নিয়ে ওই খালগুলিতেও ঢুকে পড়ছে। তাতে যে কোনও সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা বনদপ্তরের।
