সঞ্জিত ঘোষ, নদিয়া: প্রথম বউয়ের এপিক নম্বর চুরি করে 'বাংলাদেশি' দ্বিতীয় বউকে দিলেন স্বামী! এহেন অভিযোগকে কেন্দ্র করে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়াল নদিয়ার (Nadia) হাঁসখালীর গাজনা গ্রাম পঞ্চায়েতের শ্যামনগর মাঠপাড়া এলাকায়। ইতিমধ্যে ঘটনায় স্বামীর বিরুদ্ধে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন স্ত্রী ঊষা রায়। হাঁসখালি থানায় 'প্রাক্তন' স্বামী অশোক রায়ের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন। এমনকী রানাঘাটএসডিওকে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন ওই মহিলা। যা খবর, ঊষা রায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে ইতিমধ্যে ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অন্যদিকে ঘটনায় শুরু হয়েছে জোর রাজনৈতিক বিতর্কও।
জানা গিয়েছে, গত কয়েকবছর আগে হাঁসখালি শ্যামনগরের বাসিন্দা অশোক রায়ের সঙ্গে ঊষা রায়ের বিয়ে হয়। কিন্তু ঊষার অভিযোগ, স্বামী প্রায় তাঁকে মারধর করত। মানসিক নির্যাতনের শিকার হতে হতো। তাঁর আরও অভিযোগ, অত্যাচারের মাত্রা ক্রমশ বাড়তে থাকছিল। বাধ্য হয়েই ছোট্ট ছেলেকে নিয়ে কলকাতায় সোনারপুর এলাকায় এসে বসবাস শুরু করে ওই মহিলা। লোকের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করেই তাঁর সংসার চলে। এদিকে স্ত্রীয়ের অনুপস্থিতিতে অশোকবাবু আরও একটি বিবাহ করে বলে দাবি ঊষা রায়ের। শুধু তাই নয়, ওই মহিলা বাংলাদেশি বলেও দাবি তাঁর।
এর মধ্যেই এসআইআর সংক্রান্ত এনুমারেশন ফর্ম নিতে শ্যামনগরে আসেন ঊষা রায়। সেই সময় জানতে পারেন, তাঁর ফর্ম অশোক দাস নিয়ে গিয়ে ফিলআপ করে জমাও দিয়ে দিয়েছে। যা শুনে রীতিমতো আশ্চর্য হয়ে পড়েন উষা রায়। তাঁর দাবি, ''২০০২ সালে তিনি হাঁসখালীর শ্যামনগরেই ছিলেন। এমনকি ২০০২ সালের ভোটার লিস্টে তাঁর নামও রয়েছে।'' এরপরেও যাচাই না করে এনুমারেশন ফর্ম কেন তাঁকে দেওয়া হল না তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন ঊষা রায়। তাঁর দাবি, ''অশোক রায় তাঁর নিজের এপিক নম্বর চুরি করে বাংলাদেশের মহিলাকে তা উপহার হিসাবে দিয়ে বউ বলে স্বীকৃতি দিয়েছে।'' শুধু তাই নয়, এনুমারেশনে দেওয়া সমস্ত তথ্য তাঁর বলেও দাবি করেছেন ওই মহিলা। যা নিয়ে একেবারে হুলস্থূল কাণ্ড। শুধু তাই নয়, ঘটনার পর থেকে রীতিমতো আতঙ্কে ঊষা রায়।
এই ব্যাপারে কৃষ্ণগঞ্জের ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের যুব সভাপতি শুভদীপ সরকার বলেন, ''আমরা প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করব তদন্ত করে সঠিক ভোটারের নাম লিপিবদ্ধ করা হোক।'' ঘটনা সত্যি হলে নির্বাচন কমিশন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে যাতে কড়া ব্যবস্থা নেয় সেই আবেদনও জানিয়েছেন তৃণমূল নেতা।
