জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: পরীক্ষার হলে চুইংগাম খাওয়া নিয়ে বিবাদ হয়েছিল! তখনই একজন অপরজনকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়! পরীক্ষার পর অভিযুক্ত দলবল নিয়ে ওই ছাত্রকে ধরার জন্য অপেক্ষা করছিল বলে অভিযোগ। সেই ছাত্রকে মারধর করতে উদ্যতও হয়েছিল তারা। বন্ধুকে বাঁচাতে এসেছিল আরেক পড়ুয়া। আর তাতেই ওই ছাত্রের পিঠে মারা হল ধারালো ছুরির কোপ! গোটা ঘটনাটি ঘটেছে স্কুলের গেটের সামনে! হাড়হিম করা ঘটনা ঘটল উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁর স্কুলে। আরও অভিযোগ, স্কুল ওই জখম ছাত্রকে হাসপাতালে না নিয়ে গিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছে। ঘটনার পর এলাকার বাসিন্দা ও অভিভাবকদের একাংশের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে বলে খবর। পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।
প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, ঘটনাটি বনগাঁর নগেন্দ্রনাথ হাই স্কুলের। আজ, শুক্রবার স্কুলে ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষার হলে এক নবম শ্রেণির পরীক্ষার্থী চুইংগাম খাচ্ছিল। সেই কথা পরীক্ষককে বলে দেওয়ার কথা জানিয়েছিল আরেক সহপাঠী। সেই নিয়ে ওই পড়ুয়া পরীক্ষার পরে সহপাঠীকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়! পরীক্ষা শেষের পর স্কুলের গেটের সামনে অন্যান্যদের নিয়ে অপেক্ষা করছিল ক্লাস নাইনের অভিযুক্ত ছাত্র তুহিন। ওই সহপাঠী স্কুল থেকে বেরনোর মুখে তাকে ধরা হয়! কলার ধরে মারধর শুরু হতেই বন্ধুকে রক্ষা করতে ছুটে গিয়েছিল ক্লাস নাইনের আরেক ছাত্র সুনীল দত্ত।
সুনীলদের সঙ্গে তুহিন ও অন্যান্যদের বচসা শুরু হয়। অভিযোগ, বিবাদের সময় তুহিন ব্যাগ থেকে ধারালো ছুরি বার করে সুনীলের পিঠে আঘাত করে। রক্তাক্ত হয় সুনীল। সহপাঠীকে ছুরির কোপ মেরে তুহিন এলাকা ছেড়ে পালায়! স্কুলে বিষয়টি অভিযোগ আকারে জানাতে গিয়েছিল অন্যান্য পড়ুয়ারা। অভিযোগ, স্কুলের তরফে 'গার্জিয়ান কল' করে বিষয়টি ছেড়ে দেওয়া হয়। রক্তাক্ত ছাত্রকে হাসপাতালে না নিয়ে গিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়! ছেলে বাড়ি ফিরলে গোটা বিষয়টি জানতে পেরে আঁতকে ওঠেন পরিবারের সদস্যরা। জখম সুনীলকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই হয় প্রাথমিক চিকিৎসা। পরিবারের পক্ষ থেকে স্কুলের নিরাপত্তা ও ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। ছাত্ররা কীভাবে ব্যাগে করে স্কুলে ছুরি নিয়ে যেতে পারে? সেই প্রশ্নও তোলা হয়েছে। রক্তমাখা জামা স্কুল কর্তৃপক্ষ রেখে দিয়েছে বলেও অভিযোগ। বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়েছে। পুলিশ বিষয়টির খোঁজখবর শুরু করেছে।
