অমিত সিং দেও, মানবাজার: দু'মাসের সন্তানকে আছড়ে খুনের অভিযোগ ওঠে বাবার বিরুদ্ধে। তাকে দোষী সাব্যস্ত করে সন্তানকে খুনের দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন পুরুলিয়া জেলা আদালতের অতিরিক্ত দায়রা বিচারক তৃতীয় কোর্টের বিচারিক অম্বরেশ ঘোষ। বৃহস্পতিবার সাজা শুনিয়েছে আদালত।
সাজাপ্রাপ্ত ব্যাক্তির নাম সাগর রুহীদাস। তার বাড়ি পুরুলিয়ার টামনা থানার ডুড়কু গ্রামে। ২০২০ সালে সাগর রুহিদাসের সঙ্গে নেহারি রুহীদাসের বিয়ে হয়। ২০২২ সালে জুন মাসে পুত্রসন্তানের জন্মদেন স্ত্রী নেহারি। তবে লাগাতার অশান্তিতে তাঁদের সম্পর্ক তলানিতে ঠেকে। বাপের বাড়ি চলে যেতে চান সাগরের স্ত্রী। '২২ সালের ৪ আগস্ট নেহারিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য আসেন তাঁর বাবার বাড়ি সদস্যরা। তবে স্ত্রীকে যেতে দিতে রাজি হয়নি সাগর। এই নিয়ে তাদের মধ্যে ফের ঝামেলা বাঁধে। সেই সময় পুত্র সন্তানকে স্ত্রীর কোল থেকে কেড়ে নিয়ে একপাক ঘুরিয়ে মেঝেতে আছাড় মারে সাগর। শিশুকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। চোখের সামনে স্বামীর হাতে সদ্যোজাত সন্তানের এমন মর্মান্তিক পরিণতি দেখে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন নেহারি।
পরের দিন, ৫ আগস্ট নেহারি রূহিদাস স্বামীর বিরুদ্ধে টামনা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ খুনের মামলা রুজু করে।এই মামলার তদন্তভার পান তৎকালীন টামনা থানায় কর্মরত সাব ইন্সপেক্টর হেমন্ত সাহা। তিনি ওই রাতেই সাগরকে গ্রেপ্তার করেন। তদন্ত শেষে এক মাসের মাথায় তদন্তকারী পুলিশ আধিকারিক আদালতে চার্জশিট জমা করেন। সাগরকে সংশোধনাগারে রেখেই কাস্টডি ট্রায়েল শুরু হয়। অবশেষে সাড়ে তিন মাসের মাথায় সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে বুধবার অভিযুক্তকে খুনের দায়ে বিচারক দোষী সাব্যস্ত করেন। বৃহস্পতিবার যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন বিচারক। এই মামলার সরকারি আইনজীবী অমিয় কুমার বন্দোপাধ্যায় বলেন, "দু'মাসের নিজের নিষ্পাপ সন্তানকে নৃশংস ভাবে খুনের মামলায় বিচারক যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন।"
