সুমিত বিশ্বাস ও টিটুন মল্লিক, পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া: পঞ্চায়েত বোর্ড (Panchayat Board) গঠনেও রাম-বাম জোট। সিপিএমের সমর্থন নিয়ে জঙ্গলমহলের দুই জেলায় বোর্ড গঠন করল বিজেপি (BJP)। পুরুলিয়ার ধানাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতে বৃহস্পতিবার বোর্ড গঠন নিয়ে গোলমাল বাঁধে। পঞ্চায়েত প্রধান নির্বাচন নিয়ে ব্যালটে লড়াইয়ের জেরেই এই জটিলতা। তবে সমস্ত জট কাটিয়ে ধানাড়ার দখল নিল সিপিএম-বিজেপি জোট। প্রধান নির্বাচিত হয়েছেন সিপিএম (CPM)প্রার্থী। উপপ্রধান পদে বিজেপির জয়ী প্রতিনিধি।
ধানাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট আসন ১১টি। পঞ্চায়েত ভোটের ফলাফল অনুযায়ী, তৃণমূল ৪, বিজেপি ২, সিপিএম ৫টি আসন পেয়েছে। এদিন তৃণমূলের (TMC) তরফে পঞ্চায়েতের প্রধান পদে মীরা বাউড়ি ও সিপিএমের সুজাতা মণ্ডল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ব্যালটে নির্বাচন হয়। ১১ জন সদস্যের মধ্যে একজন ভোট দেননি। ১০টির মধ্যে সিপিএম ও তৃণমূলের পক্ষে ৫টি করে ভোট পড়ে। তবে তৃণমূলের অভিযোগ, তাদের ৫টির মধ্যে একটি ব্যালটে তৃণমূলেই প্রথম ভোট দেওয়া হয়েছিল। পরে তা কেটে সিপিএমকে ভোট দেওয়া হয়। মানবাজার ১ ব্লকের প্রিসাইডিং অফিসার পরের ভোটটিকে মান্যতা দেওয়ায় ধানাড়া গ্রাম পঞ্চায়েত বিজেপির সমর্থন নিয়ে দখল করে সিপিএম। এর প্রতিবাদে প্রায় ঘণ্টা দুয়েক মানবাজার-বান্দোয়ান রাস্তায় অবরোধ করেন তৃণমূল সমর্থকরা। পরে বিদায়ী সভাধিপতির হস্তক্ষেপে অবরোধ ওঠে।
[আরও পড়ুন: বলি নায়িকারাও ‘ফেল’? কালো লেহেঙ্গায় আয়ুষ্মান খুরানার ঠুমকা দেখে ‘কুপোকাত’ পুরুষরা!]
ধানাড়ার তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি ও সহ-সভাপতি প্রশ্ন তুলেছেন, একই ব্যালটে একজন দু’বার ভোট দেয় কীভাবে? মানবাজার ১ ব্লকের বিডিও (BDO) মোনাজ কুমার পাহাড়ির কাছে অভিযোগ করেন জেলা পরিষদের বিদায়ী সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়,মানবাজার ১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি দিলীপ পাত্র। সুজয়বাবু প্রশ্ন তুলেছেন, কীভাবে এক ব্যালটে ২ বার ভোট দেওয়া হল? এটি বৈধ হিসেবে কেন ধরা হল? এই সংক্রান্ত আদেশনামা দেখানোর জন্য বিডিওকে বলেন তিনি। এ বিষয়ে বিডিও মোনাজ কুমার পাহাড়ি বলেন, ”বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।” ধানাড়ার পঞ্চায়েত প্রধান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন সিপিএমের সুজাতা মণ্ডল ও উপপ্রধান বিজেপির পাখি বাউড়ি। জেলা সিপিএমের নেতা প্রদীপ চৌধুরীর দাবি, ”আমরা ভালভাবে কাজ করব। এখন তৃণমূলের উপর মানুষের আর ভরসা নেই কোনও। একসঙ্গে বোর্ড গঠন করলাম।”
[আরও পড়ুন: ‘ডন ৩’র টিজারে রণবীর সিংকে দেখে তুমুল কটাক্ষ নেটপাড়ায়! স্ত্রী দীপিকার কী প্রতিক্রিয়া?]
বৃহস্পতিবার একই ঘটনা ঘটেছে বাঁকুড়ার (Bankura) বড়জোড়া ব্লকে। সেখানে বৃহস্পতিবার বৃন্দাবনপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন হল। এখানে মোট ১১টি আসন রয়েছে। তার মধ্যে তৃণমূল ও বিজেপি উভয়েই পাঁচটি করে আসন পেয়েছে। বাকি একটি আসন জিতেছে সিপিএম। এদিন বোর্ড গঠনের সময় জয়ী সদস্যদের ভোটাভুটি হয়। তাতে একজন সিপিএম সদস্য ভোটদানে বিরত থাকেন। বাকি জয়ী সদস্যদের ভোটাভুটিতে বোর্ড গঠন করল বিজেপি। পঞ্চায়েত বোর্ড গঠন শেষে ওই সিপিএম সদস্য জানিয়েছেন, তিনি বিজেপিকেই সমর্থন করেছেন ভোটাভুটিতে।
পরেশ লোহার নামে পঞ্চায়েতের ওই সিপিএম সদস্য বলছেন, ‘‘আমি বিজেপিকে সমর্থন করেছি। দলের আঞ্চলিক স্তরে ও কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’ তবে দলের জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে এই নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি বলেই জানাচ্ছেন পরেশবাবু। তাঁর দাবি, আঞ্চলিক স্তরে দলের যা নির্দেশ ছিল, সেই মতোই তিনি কাজ করেছেন।
দেখুন ভিডিও:
