ধীমান রায়, কাটোয়া: মোটা মোটা লাঠিতে লাগানো রয়েছে লালঝাণ্ডা। হাতে তিরধনুক। এমনই ‘সুসজ্জিত হয়ে কয়েকশো কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে নিয়ে মঙ্গলবার পূর্ব বর্ধমান জেলার আউশগ্রাম ১ বিডিও অফিসে মনোনয়নপত্র দাখিল করতে এল সিপিএম। ঘটনা ঘিরে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। যদিও বিডিও অফিস চত্বর ও তার আশপাশে ১৪৪ ধারা জারি থাকায় পুলিশ সিপিএমের লোকজনদের নির্দিষ্ট দূরত্ব থেকেই আটকে দেয়।
গত শুক্রবার থেকেই পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া শুরু হয়েছে। এই কয়েকদিন ধরেই মূলত বিরোধীদলগুলিই মনোনয়নপত্র জমা দিচ্ছে। আউশগ্রাম ১ ব্লকে রয়েছে সাতটি গ্রামপঞ্চায়েত। তবে সোমবার পর্যন্ত দেখা যায় আউশগ্রাম ১ ব্লকে শুধুমাত্র বিজেপির কয়েকজন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। মঙ্গলবার দেখা গেল, গুসকরা শহরে আউশগ্রাম ১ ব্লক অফিসে সিপিএমের প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দিতে এসেছেন। রীতিনীতি দল বেঁধে কয়েকশো সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে আসা হয়েছে। ছিল প্রচুর আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ। তাঁদের হাতে ছিল তীরধনুক। আবার মোটা মোটা লাঠিতে লালঝাণ্ডা লাগিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে। গুসকরা বিডিও অফিস থেকে নির্দিষ্ট দূরত্বে যদিও পুলিশ ওই সমস্ত লোকজনদের আটকে দেয়।
[আরও পড়ুন: WB Panchayat Election 2023: রণক্ষেত্র ভাঙড়ে আরাবুল ইসলামের ছেলের গাড়ি থেকে উদ্ধার বোমা, নিশানায় ISF]
সিপিএমের গুসকরা এরিয়া কমিটির সদস্য সুব্রত মজুমদার বলেন, “তৃণমূলের মতন দুর্নীতিগ্রস্থদের প্রতিরোধ ছাড়া ক্ষমতাচ্যুত করা সম্ভব নয়। পুলিশ-প্রশাসনকেও ওরা কিনে নিয়েছে। তাই পুলিশ-প্রশাসনকেও চাপে রাখতে গেলে আমাদের তীর-ধনুক নিয়ে নামতে হবে। তাছাড়া তীরধনুক হল সাধারণ আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষদের চিরাচরিত হাতিয়ার।” সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য আলমগীর মণ্ডলের দাবি, “আমরা বিগত পঞ্চায়েত নির্বাচন দেখেছিলাম। তখন তৃণমূল কংগ্রেস বিরোধীদের মনোনয়নপত্র জমা দিতে দেয়নি। প্রকাশ্যে কিরকম সন্ত্রাস করেছিল সবাই দেখেছিলেন। তাই অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার লাঠিসোঁটা নিয়েই আস্তে হয়েছে প্রতিরোধের জন্য।”
সিপিএমের এভাবে লাঠিসোঁটা ও তীরধনুক নিয়ে মনোনয়নপত্র দাখিল করতে আসার প্রসঙ্গে আউশগ্রামের বিধায়ক অভেদানদ থাণ্ডার বলেন, “আমাদের দলের শীর্ষ নেতৃত্ব বলেই দিয়েছেন এই ভোট অবাধ শান্তিপূর্ণভাবে হবে। বিরোধীরা সকলেই সুষ্ঠভাবে মনোনয়নপত্র দাখিল করার সুযোগ পাবেন বলেও মুখ্যমন্ত্রী আগেই ঘোষণা করেছেন। তাই এরপরেও এভাবে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মনোনয়ন জমা দিতে আসার প্রয়োজন ছিল না। বিষয়টি প্রশাসনের দেখা উচিত।
