সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: 'বন্দে মাতরম' গানের ১৫০ বর্ষপূর্তিতে সংসদে আলোচনা করতে গিয়ে স্রষ্টা বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়কে 'বঙ্কিমদা' সম্বোধন করে বিস্তর সমালোচনার মুখে পড়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Modi)। সাংস্কৃতিক মহল থেকে আমবাঙালি, সকলেই প্রধানমন্ত্রীর বাকভঙ্গিমার সমালোচনায় মুখর। এবার কলকাতা পুরসভাতেও (KMC) এনিয়ে নিন্দা প্রস্তাব পাশ হয়ে গেল। বৃহস্পতিবার পুরসভার অধিবেশনে মোদির 'বঙ্কিমদা' সম্বোধনের প্রতিবাদ জানিয়ে নিন্দা প্রস্তাব আনেন ৯৮ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অরূপ চক্রবর্তী। তাঁকে সমর্থন জানান সিপিএম, কংগ্রেসের কাউন্সিলররাও। তবে এনিয়ে আলোচনার সময়ে বিজেপি কাউন্সিলরদের আপত্তিকর মন্তব্য নিয়ে কিছুটা বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। পরে অবশ্য তা মিটেও যায়।
জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার পুর-অধিবেশনে 'বঙ্কিমদা' বিরোধী নিন্দা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনায় বক্তব্য রেখেছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম, মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার। ফিরহাদ হাকিমের বক্তব্য, ''বঙ্কিমচন্দ্র, রবীন্দ্রনাথ - এঁদের উচ্চতা এতটাই যে নাম উচ্চারণ মাত্র ভারতকে বোঝায়। তাঁদের কোনও নির্দিষ্ট জাতি, ধর্ম, বর্ণে বেঁধে রাখা যায় না। বঙ্কিমচন্দ্রের সৃষ্ট 'বন্দে মাতরম' উচ্চারণ করে হাসতে হাসতে কত মানুষ প্রাণ দিয়েছেন। আসলে স্বাধীনতা সংগ্রামে তো বিজেপির কোনও ভূমিকা নেই। তাই ওরা জানে না। তাঁদের 'বঙ্কিমদা' বলা লোকজন নিজেরা কতটা অসভ্য, তারই প্রমাণ দিয়েছে। ঈশ্বর, ওরা জানে না কী অপরাধ করছে, ওদের ক্ষমা করে দিও।''
ফিরহাদের এসব বক্তব্যের সময় বিজেপির বেঞ্চ থেকে গুঞ্জন শুরু হয়। মেয়রের অতীতের কিছু মন্তব্য তুলে ধরে শ্লেষের সুরে কথা বলেন বিজেপি কাউন্সিলররা। তা কানে পৌঁছতেই তীব্র প্রতিবাদ করেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। রীতিমতো চ্যালেঞ্জের সুরে বলেন, ''যদি প্রমাণিত হয়, আমি এরকম কিছু বলেছি, তাহলে তখনই সমস্ত পদ ছেড়ে দেব। আমি আগে ভারতীয়, তারপর হিন্দু কিংবা মুসলিম। ভারতবিরোধী কোনও কথা আমার মুখ দিয়ে উচ্চারিত হয়েছে, এমন প্রমাণ দিতে পারলে সঙ্গে সঙ্গে ইস্তফা দেব।'' পরে অধিবেশন শেষে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এই সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে ফিরহাদ ফের একই কথা বলেন। সেইসঙ্গে বলেন, ''কেউ একজন হঠাৎ রাস্তায় অসুস্থ হয়ে পড়লে আমি কি দেখব তিনি হিন্দু না মুসলমান নাকি খ্রিস্টান? আগে তো তাঁকে সুস্থ করার চেষ্টাই করব।''
