shono
Advertisement

দিঘায় বিষাক্ত ‘ইয়েলো বেলি’ সাপ! কামড়ালে শরীর পুরোপুরি পক্ষাঘাতগ্রস্ত, কাজ করে না অ্যান্টি ভেনাম

এই সাপ মূলত আরব সাগরের বাসিন্দা। কী করে এই বিষধর দিঘায় এল তা ভেবে আকুল সর্পবিশেষজ্ঞরা। 
Posted: 02:44 PM Jul 31, 2023Updated: 06:19 PM Aug 01, 2023

গৌতম ব্রহ্ম: এক ছোবলেই ছবি! কামড়ালে শরীর পুরোপুরি পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়ে। প্রথমে কিডনি বিকল হয়, তারপর হার্ট। প্রস্রাবের রং হয়ে যায় কফির মতো। এ যেন সাক্ষাৎ মৃত্যু! যার দেখা মিলল দিঘায়। তাতেই উদ্বেগে কাঁটা চিকিৎসককুল থেকে সর্পবিশেষজ্ঞ, সবাই। কারণ, ‘অ‌্যান্টি স্নেক ভেনাম’ এই সাপের কামড়ে কোনও কাজ করে না। 

Advertisement

ইয়েলো বেলি সি-স্নেক। বৈজ্ঞানিক নাম ‘পেলামিস প্ল‌্যাটুরাস’। ছোটখাটো চেহারা (আড়াই থেকে তিন ফুট)। পেটের নিচটা হলদেটে। দেখতে অনেকটা কুচে মাছের মতো। আসল বৈশিষ্ট‌্য লেজে। পশ্চাৎদেশ নৌকোর দাঁড়ের মতো চ‌্যাপ্টা! মুখ হাঁসের ঠোঁটের মতো। সম্প্রতি দিঘার সমুদ্র উপকূলে দেখা মিলল এই সাপের। মূলত আরব সাগরের বাসিন্দা। কী করে এই বিষধর দিঘায় এল তা ভেবে আকুল সর্পবিশেষজ্ঞরা। এই নিয়ে উপকূলবর্তী এলাকাগুলিকে সতর্ক করা হয়েছে। চিকিৎসক দয়ালবন্ধু মজুমদার জানিয়েছেন, এই সাপ ভয়ংকর। ‘মায়োটক্সিক ভেনম’। পেশী অকেজো করে দেয়। মায়োগ্লোবিনুরিয়া হয়। একে একে কিডনি, হার্ট বিকল হতে থাকে। এভিএস কাজ করে না। সাপে কাটা রোগের বিশ্ববরেণ‌্য চিকিৎসক অধ‌্যাপক ডা. হিম্মতরাও বাভস্করেরও একই পর্যবেক্ষণ। অর্থাৎ এই সাপ কামড়ালে চিকিৎসকরা কার্যত অসহায়। বড়জোড় উপসর্গভিত্তিক চিকিৎসা হবে।

[আরও পড়ুন: আগামী ৪৮ ঘণ্টায় রাজ্যজুড়ে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা, মৎস্যজীবীদের উপকূলে যেতে নিষেধাজ্ঞা]

পশ্চিমবঙ্গে মূলত চার গোত্রের বিষধর সাপের হদিশ মেলে। কালাচ, কেউটে, গোখরো ও চন্দ্রবোড়া। শঙ্খচূড়, শাখামুটি বিষাক্ত হলেও মানুষকে দংশন করার উদাহরণ নেই বললেই চলে। এদের সবার মধ্যে বিষের তীব্রতায় কালাচ এবং কৃষ্ণ কালাচই সবচেয়ে এগিয়ে। কিন্তু এই ইয়েলো বেলিড সামুদ্রিক সাপ কালাচের থেকে অনেক বেশি বিষাক্ত! এমনটাই জানালেন অন্বেষণ পাত্র। গাঙ্গেয় উপকূলের সামুদ্রিক সাপ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা করছেন আন্নামালাই বিশ্ববিদ‌্যালয়ের এই গবেষক। জানালেন, ভারতে ২৪ রকমের সামুদ্রিক সাপ পাওয়া যায়। দিঘায় পাওয়া ইয়েলো বেলি এর মধ্যে সবচেয়ে বিষাক্ত। অতএব সাবধান হওয়াই বাঞ্ছনীয়। আসলে, কালাচ, কেউটে, গোখরো, চন্দ্রবোড়ার দংশনে রোগীকে এভিএস দেওয়া হয়। দংশনের একশো মিনিটের মধ্যে একশো মিলি এভিএস পেলে বেঁচে যায় রোগী।

ভিডিওটি তৈরিতে সাহায্য করেছেন সোমনাথ সিং: 

কিন্তু এই পলিভ‌্যালেন্ট এভিএসে যেহেতু কোনও সামুদ্রিক সর্পবিষের উপাদান নেই, তাই চিন্তা। সর্পবিশেষজ্ঞ বিশাল সাঁতরা জানালেন, ‘‘এই সাপ মূলত আরব সাগরের বাসিন্দা। বঙ্গোপসাগরে সচরাচর দেখা মেলে না। তবে মাঝেমধ্যে চলে আসে এদিকে।’’ বিশাল জানালেন, চরিত্রগত কারণের সামুদ্রিক সাপের বিষ বেশি। বহু মৎস‌্যজীবীর প্রাণ কেড়েছে এই সাপ। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই মৃত্যুগুলি ‘রিপোর্টেড’ হয় না। তাই জানা যায় না। 

[আরও পড়ুন: ‘বেছে বেছে মুসলিমদের খুন কেন?’ ট্রেনে শুটআউটে ধৃত কনস্টেবলকে নিয়ে বিস্ফোরক IG, RPF]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement